৮ বিয়ে কথিত সাংবাদিক নেতার!
একটি ভিজিটিং কার্ডে ২১ পদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ৮ টি বিয়ে করেছেন। কখনো মানবধিকার সংগঠনের চেয়ারম্যান, কখনো সাংবাদিক সংগঠনের চেয়ারম্যান, আবার কখনো কখনো তদন্ত কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন মো. আতিকুর রহমান আতিক (৩৯)। তিনি পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের ছোট শিবের চর গ্রামের গ্রাম পুলিশ হাবিবুর রহমানের ছেলে আতিকুর রহমান। অবশেষে বহুরূপী এই প্রতারক র্যাবের খাঁচায় বন্দি হয়েছে।
রাজধানীর রূপনগর থানাধীন এলাকা ইষ্টার্ণ হাউজিং থেকে প্রতারক চক্রের ১ সদস্য আতিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪। র্যাব-৪ অপস অফিসার সিনিয়র এএসপি মো. সাজেদুল ইসলাম প্রকৌশল নিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করে জানান, রোববার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ১ টি ট্যাব, ১ টি মোবাইল, ১ টি ওয়াইফাই রাউটার, ২ টি আইডি কার্ড, ৫০ টি ভিজিটিং কার্ড ও ৫ টি হার্ড ফাইল উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-৪ সূত্র জানায়, মো. আতিকুর রহমান আতিক (৩৯) ১৯৮২ সালে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা থানায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবত সিদ্ধিরগঞ্জ স্থানীয় স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে ডিজিটাল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন নামে একটি মানবাধিকার সংস্থা খুলে তিনি নিজেই তার প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। কথিত মানবাধিকার সংস্থার চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে তার পরিচয় হয়। মূলত সেখান থেকেই তার প্রতারণা কার্যক্রম শুরু হয়।
ধৃত আসামী বিভিন্ন ক্ষমতাশীল ব্যক্তিদের পরিচয় দিয়ে তাদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষের কাছে ভুয়া পরিচয় দিয়ে দিয়ে তিনি দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী অফিস খুলে চাকুরী দেওয়া, জমি উদ্ধার, ফ্ল্যাট উদ্ধার এই সমস্ত কাজের কথা বলে সাধারণ মানুষের নিকট হতে প্রতারণার উদ্দেশ্যে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিয়ে তা আত্মসাৎ করে আসছে। দেশের বিভিন্ন নিরীহ ও সাধারণ মানুষ কে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তাদের ব্যবহার করে জোরপূর্বক জমি ও টাকা পয়সা কেড়ে নিয়ে তা আত্মসাত করতো। সে চলাফেরা করেন আলিশান গাড়িতে, সব সময় যেনো মিটিং লেগেই আছে।
এই আতিকুর রহমান আতিক তার সুন্দর চেহারার মোহে বিভিন্ন নারীদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে সেগুলোর গোপন ভিভিও ধারণ করে তাদেরকে ফাঁদে ফেলত এবং সেই ভিডিও কাজে লাগিয়ে সে নারীদেরকে বিভিন্ন অপকর্মে কাজ করাতে বাধ্য করত। এছাড়া সে বিভিন্ন এলাকার নারীদের সাথে বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে তাদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। এই পর্যন্ত সে বিভিন্ন এলাকায় ভূয়া পরিচয় দিয়ে মোট ৮ জন নারীকে বিবাহ করেছে বলে জানা যায়। তাদের সাথে কিছু দিন সম্পর্ক রাখার পর প্রতারণাপূর্বক টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যেত। পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা থানায় তার নামে একটি ধর্ষন মামলা রয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি এসবের সত্যতা স্বীকার করেছে এবং এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ।
প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস