ইভটিজিং, বাসা লুটপাট, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, অতঃপর...


প্রকৌশল প্রতিবেদক:
ইভটিজিং, বাসা লুটপাট, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, অতঃপর...
  • Font increase
  • Font Decrease

চলমান লকডাউনে বাসা পরিবর্তনের মধ্যেই বাজার করতে গিয়ে এক নারী ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছেন। এলাকার ছাত্রলীগ নামধারী এসব বখাটে যুবকেরা শুধু ইভটিজিং করেই ক্ষান্ত হয়নি, ওই নারীর পিছু নিয়ে বাসায় ঢুকে তার স্বামীকে ব্যাপক মারধর করে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে বীরদর্পে চলে যায়। পরে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হলে, প্রথম পর্যায়ে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। পরে ওই নারী বিষয়টি উল্লেখ করে সোস্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দেন। ঘটনাটি ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ দুই বখাটে যুবককে গ্রেফতার করে। এ ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর হাজারীবাগ থানাধীন জিগাতলার তল্লাবাগে। সোমবার সকালে ওই ঘটনা ঘটার পর মঙ্গলবার রাতে পুলিশ মানিক (৩২) ও মালেক (৩৫) নামে দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ওই নারী গণমাধ্যমকে জানান, সোমবার সকালে বাড়ির সামনের দোকানে সপ্তাহের বাজার করতে যান। বাজার করার সময় ৩ জন যুবক তাকে টিজ করতে থাকেন। বাজার নিয়ে বাসায় আসার সময় তারা ওই নারীর পিছু নেয়। বাসায় ঢোকার পর ওই বখাটেরা তার ফ্ল্যাটের দরজায় নক করে। পরে বাড়ির মালিককে ডেকে এনে দরজা খুলে দিলে বখাটেরা তার স্বামীর ওপর মারধর। তিনি বিষয়টি তার বড় আপু যিনি পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, তাকে জানান।

হাজারীবাগ থানা থেকে পুলিশ আসার পর বখাটেদের নেতা সাখাওয়াত হোসেন জনিকে দেখে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। পরে ওই নারী হাজারীবাগ থানায় গিয়ে জনি, ইসমাইল হোসেন তপু, রায়হান হোসাইন জীবন, আশিক, রাজন আহমেদ, দ্বীপ হোসেন রিমন ওরফে সাকিল ও আলামিন খানের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।

হাজারীবাগ থানার এস আই আবু জাফর খান জানান, মঙ্গলবার রাতে ওই ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ভাইরাল হওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস:
নতুন বাসায় উঠছি ২ তারিখ, বাসা গোছানোর জন্য নিয়ে আসছি ছোটবোন অষরধহধ ঝহরমফযধ আর ওর বর কে। বাসায় টোটাল মানুষ চারজন। এই তিনদিন বাইরে থেকে ফুড পান্ডায় খাবার অর্ডার করে খেয়েছি। গতকাল সন্ধ্যায় মুটামুটি ঘর গোছানো শেষ হয়ে গেছিল, ভাবলাম বাজার করে এনে রান্না করি। বাসার নিচের দোকানে গেলাম, পোলার চাল, চিনি, মসলা যাবতীয় মাসের বাজার করতেছিলাম, ৩ টা ছেলে দোকান থেকে শুরু করে বাসা অবধি আসলো টিজ করতে করতে, কথা বলার মুড ছিলনা, তাই প্রতিবাদও করিনি। বাসায় ঢুকে তাকিমকে বললাম নিচের পোলাপান তো অসহ্যরকম বেয়াদব, থাকব ক্যামনে।

বাসায় এসে বাজারের বস্তা রেখে বেডরুমে বসেছি মাত্র , এমন সময় দরজায় নক, মিররে তাকিয়ে দেখলাম অই ছেলেগুলা, বাড়িওয়ালাকে কল দিলাম, উনি আসলো , দরজায় নক করল, দরজা খুললাম , ৮/৯ জন ছেলে ধুপধাপ চড় থাপ্পর, তাকিমের মাথা দেয়ালে ঠেস দিয়ে ধরল, আমি ছুটাতে গেলাম, আমার গলা চিপে, মুখ চিপে ধরল, তাকিম কোনমতে ৯৯৯ এ কল দিল, থাবা মেরে মোবাইল নিয়ে নিল, ক্রমাগত মারধোর করতে লাগল তিনজন, বাকিরা পুরোঘর তছনছ করে মানিব্যাগ, পার্স, মোবাইল নিয়ে নিজের বাপের স্বম্পত্তি মনে করে পকেটে ঢুকাতে লাগল, চকলেট ছিল - খাইতে থাকল, বইয়ের শোকেচ থেকে বই নিল, আর মারধোর চলতে থাকল! সাথে সাথে মারের ভিডিও করতে লাগল, আমি কলার ধরতে গেলাম, চিল্লাচিল্লি করতেছিলাম তোরা কারা? কি চাস? আমারে গলাচিপে ধরল, বলল আমরা এলাকার বাপ! নিজেদের ইচ্ছামত সব নিয়ে মারতে মারতে চলে গেল। থ হয়ে তাকিয়ে দেখলাম।

বাড়িওয়ালার সামনেই সব ঘটল, উনি ভয়ে চুপসে হাতে চুড়ি পইরা খাড়াই রইলেন। কিছুক্ষন পর বড় আপু এডিশনাল এসপি কে কল দিলাম, আপু হাজারীবাগ থানা থেকে পুলিশ ফোর্স পাঠালো, তারা আসার আগেই বাড়িওয়ালা ডাকলেন এলাকার নেতা সাখাওয়াত হোসেন জনিকে। উনি অই ডাকাতদের একজনকে সাথেই নিয়ে আসলো , সে উপরের ব্যক্তি (শাখাওয়াত হোসাইন জনি) র সামনেই বলল মারছি আরো মারব, বলে পার্ট দেখাইয়া বের হয়ে গেল। জনি সাহেব নাটক ---সরি মরি বইলা বলল আপনাদের যা স্টেপ নেয়ার নেন। পুলিশ টিম আসলো , সব যাচাই করল, খোঁজখবর নিল ওদের, কেউ ওদের নাম জানেনা, মুখ চিনে , জোকস না?? থানায় গিয়ে মামলা করে ফিরলাম বাসায়।

এসে বাড়িওয়ালার সাথে কথা বলে জানলাম, ওরা বলছে আপনাদের বাসায় নতুন ভাড়াটিয়া উঠছে, ও আমার বন্ধু, এই বলে ভিতরে ঢুকছে। ব্লা ব্লা ব্লা...।

এবার আসি মোদ্দাকথায়, উনারা এলাকার গলির পাগলা কুত্তা, উনাদের ইয়াবা ব্যবসা, ছিনতাই, ডাকাতি সমন্ধে সবাই অবগত, কিন্ত এরা কোন একজন এস আই"র ফর্মা হয়ে কাজ করে তাই ভয়ে...।

প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস