ছিলেন কম্পিউটার অপারেটর, এখন ‘সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার’ মালিক
কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে টেকনাফ স্থল বন্দরে দিনে ১৩০ টাকা বেতনে চাকরি করতেন নুরুল ইসলাম। ২০ বছরে তিনি চাকরিকে পুঁজি করে ‘অবৈধভাবে’ সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে র্যাব।
গতকাল সোমবার মধ্যরাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে র্যাব কর্মকর্তারা তাকে বাংলাদেশি জাল নোট, মিয়ানমারের মুদ্রা ও ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেন। মঙ্গলবার র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের বলেন, নুরুল বন্দরে কর্মরত থাকাকালীন তার অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে চোরাকারবার, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস ও দালালির কৌশল রপ্ত করে। প্রায় ৮ বছর পর চাকরি ছেড়ে নিজেই দালালির সিন্ডিকেট তৈরি করেন।
তিনি বলেন, “নুরুল নিজের লোককে তার পদে বসিয়ে ওই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বন্দর এলাকায় দালালির কার্যক্রমের প্রসার ঘটায়। চিহ্নিত ১০-১৫ জন সদস্যকে নিয়ে নুরুল পণ্য খালাস, পরিবহন সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পথিমধ্যে অবৈধ মালামাল খালাসে সক্রিয় থাকত। একই সাথে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে কাঠ, শুটকি মাছ, বরইয়ের আচার, মাছের চালান রপ্তানির আড়ালে মাদকসহ অবৈধ পণ্য নিয়ে আসত।”
র্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, টেকনাফ বন্দর, ট্রাক স্ট্যান্ড, বন্দরের শ্রমিকদের ও জাহাজের আগমন-বর্হিগমনও নুরুলের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করত।
“সিন্ডিকেটের মাধ্যমে উপার্জিত কোটি কোটি টাকাকে হালাল করতে এমএস আল নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, এমএস মিফতাউল এন্টারপ্রাইজ, এমএস আলকা এন্টারপ্রাইজ, আলকা রিয়েল স্টেট লিমিটেড এবং এমএস কানিজ এন্টারপ্রাইজ নামে প্রতিষ্ঠান গড়িয়ে তুলে নুরুল।”
প্রাথমিক অনুষ্ঠানে ঢাকা শহরে তার ছয়টি বাড়ি ও ১৩টি প্লট ছাড়াও সাভার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে ৩৭টি বাড়ি, খোলা জায়গা-প্লট ও বাগানবাড়ি এবং ১৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার তথ্য মিলেছে বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
‘অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের আনুমানিক মূল্য ৪৬০ কোটি টাকা’ জানিয়ে কমান্ডার মঈন বলেন, নুরুল এখন জাহাজ শিল্প ও ঢাকার কাছে একটি বিনোদন পার্কে বিনিয়োগ করছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও তদন্তের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আশাপ্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।