গৃহকর্মী নির্যাতনকারী দম্পতির ফের রিমান্ড শুনানি ১৮ জুলাই
রাজধানীর তোপখানা রোডের একটি বাসায় ১২ বছর বয়সী গৃহকর্মী সুইটির ওপর নির্যাতনের মামলায় তানভীর আহসান পাভেল ও নাহিদ জাহান আঁখিকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ এ আবেদন মঞ্জুর করেন।
গত ৬ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা ওই দম্পতিকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন।
বৃহস্পতিবার কারাগার থেকে ওই দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এদিকে, তদন্ত কর্মকর্তা এ দম্পতির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছেন। আগামী ১৮ জুলাই রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। সুইটির ওপর নির্যাতনের ঘটনায় তার বাবা শহিদ মিয়া শাহবাগ থানায় তানভীর আহসান পাভেল ও নাহিদ জাহান আঁখিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, অভাবের কারণে ৯ মাস আগে সুইটিকে পাভেল ও আঁখির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে পাঠানো হয়। তার মাসিক বেতন ধার্য করা হয় ৩ হাজার টাকা। দুই মাসের বেতন নিয়ে যান শহিদ মিয়া। বাকি সাত মাসের বেতন আর দেননি আসামিরা। এমনকি সুইটির সঙ্গে দেখা করতে বা ফোনে কথা বলতে দেননি আসামিরা। ঠিকমতো কাজ না করার অজুহাতে পাভেল ও আঁখি দীর্ঘদিন ধরে সুইটির ওপর নির্যাতন করেছে। গত ১ জুলাই বেলা ১১টার দিকে লাঠি দিয়ে সুইটির হাত, পা, পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে তারা। রাত ১০টার দিকে সুইটির পরনের কাপড় খুলে ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে মশা মারার ইলেকট্রিক ব্যাট দিয়ে পশ্চাৎদেশের দুই পাশে শক দেওয়া হয়। এতে সুইটির নিতম্ব ঝলসে যায়।
পাভেল ও আঁখি রুটি তৈরির কাঠের বেলুন দিয়ে সুইটির বাম হাতের কনুইয়ের হাড় ভেঙে দেয়। সুইটির যৌনাঙ্গে বেলুন ঢুকিয়ে নির্যাতন করে আঁখি। চোখে-মুখে ও যৌনাঙ্গে মরিচ লাগিয়ে দেয়। সুইটি জীবন বাঁচানোর জন্য আসামিদের বাসা থেকে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে ভাত খেতে না দিয়ে দুই দিন বাথরুমে আটকে রাখা হয়। ৩ জুলাই সুইটি বাথরুম থেকে বের হয়ে তাদের ঘরে থাকা বিস্কুট খেলে আসামিরা রাত ১টার দিকে সুইটিকে আবারও মারপিট করে। সুইটি কৌশলে আসামিদের বাসা থেকে পালিয়ে একজনের বাসায় আশ্রয় নেয়। তারা পুলিশে খবর দেয়। ৪ জুলাই পুলিশ এসে সুইটি উদ্ধার করে এবং পাভেল ও আঁখিকে আটক করে। পরের দিন ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তারা কারাগারে ছিলেন।
প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস