সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচন স্থগিত
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে আগামী ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদের সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। আজ সোমবার (২৬ জুলাই) দুপুরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক ভার্চুয়াল বেঞ্চে উপ-নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আদালতে আবেদনটি উপস্থাপন করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও বিপুল বাগমার। স্থানীয় সাত বাসিন্দা এবং ছয়জন আইনজীবী এ রিট আবেদন করেন।.
এর আগে ভোট গ্রহণ স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে রবিবার আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছিলো। সুপ্রিম কোর্টের ৫ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এই নোটিশ দিয়েছিলেন। নোটিশদাতা পাঁচ আইনজীবী হলেন মোহা. মুজাহিদুল ইসলাম, আল-রেজা মো. আমির, মো. জোবায়দুর রহমান, মো. জহিরুল ইসলাম এবং মুস্তাফিজুর রহমান।
নেটিশে বলা হয়, গত ১১ মার্চ সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। ১৫ মার্চ নির্বাচন কমিশন (ইসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে ওই আসন শূন্য ঘোষণা করে। ২৯ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী ৮ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে। কিন্তু দৈব দুর্বিপাকের কারণে তা সম্ভব না হওয়ায় সংবিধান অনুযায়ী আরও ৯০ দিন সময় বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ পায় ইসি। এরপর গত ২ জুন ওই উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এই তফসিলে ১৪ জুলাই ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে ইসি ১৫ জুন তারিখ পরিবর্তন করে ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করে ২৮ জুলাই।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, দৈব দূর্বিপাকের কারণে সংবিধান অনুযায়ী সিলেটের এ উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তাই ২৮ জুলাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য উপ-নির্বাচন স্থগিত করা যাবে না, এই বক্তব্য আইনের সঠিক ব্যাখ্যা নয়। ইসির উচিত চলমান করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে লকডাউনের সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন না করা এবং ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্য যে কোনো সময়ে ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করা। ৩ লাখ ৫২ হাজার ভোটারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠান সরকারের বর্তমান লকডাউন নীতিরও বিরোধী।
করোনা আক্রান্ত হয়ে এ বছরের ১১ মার্চ সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যু হয়। এরপর ১৫ মার্চ আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল ঘোষণার পর ৯০ দিন পেছালেও ২৮ জুলাই ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। ওইদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাবিবুর রহমান নৌকা প্রতীকে, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আতিকুর রহমান লাঙ্গল প্রতীকে, বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া ডাব প্রতীকে এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য (বহিস্কৃত) স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমেদ চৌধুরী মোটর গাড়ি মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। করোনা পরিস্থিতিতে কঠোর লকডাউন দিয়ে সরকার মানুষকে ঘরে রাখার চেষ্টাকালে প্রার্থীরা নেতাকর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তফসিল অনুযায়ী ২৬ জুলাই রাত ১২টায় প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকবে।