দাদন ব্যবসায়ীর হাত থেকে বাঁচতে চায় প্রভাত


মো. ফেরদাউছ মিয়া,পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা:
দাদন ব্যবসায়ীর হাত থেকে বাঁচতে চায় প্রভাত
  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ২০ বছর আগে নেওয়া ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার সুদ হিসেবে এক কোটি ২৬ লক্ষ টাকা পরিশোধের পরেও দাদন ব্যবসায়ীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন পৌর এলাকার গৃধারীপুরের ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ী প্রভাত চন্দ্র। আত্মহত্যা ও দেশ ত্যাগ ছাড়া এই দাদন ব্যবসায়ীর হাত থেকে কোন রক্ষা নেই বলে আবেগ আপ্লুত কন্ঠে প্রভাতের পরিবার গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

প্রভাত চন্দ্র জানান, তার ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসা (ডিস ব্যবসা) শুরুর সময় গৃধারীপুর গ্রামে ময়নুল হক আকন্দ ময়না মিয়ার ছেলে দাদন ব্যবসায়ী রুহুল আমিন ও জহুরুল ইসলামের নিকট থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন। সুদ হিসেবে প্রতি হাজারে মাসিক ১৫০ টাকা হারে এক মাসে মোট ৫২ হাজার ৫ শ টাকা হারে প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতি দেন। 

সেই অনুপাতে দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ সুদখোর রুহুল আমিন ও জহুরুলকে প্রতি মাসে ৫২ হাজার ৫ শ টাকা করে প্রদান করে আসছিল। গত বছরে করোনা কালীন সময়ে ক্যাবল ব্যবসার মান্দা ভাব দেখা দেওয়ায় বাঁধে বিপত্তি। মাসিক লাভের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয় প্রভাত চন্দ্র। এরপর থেকেই জহুরুল ও রুহল আমিন প্রভাতকে টাকা পরিশোধের জন্য বিভিন্নভাবে মানুষিক চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।

দুই এক দিন পর পর তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় টর্চার সেলে।চালানো হয় নির্যাতনের ষ্টিম রোলার! এরপর আটকে রেখে বেশ কয়েকটি সাদা চেকের পাতা ও সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেয়।শুধু মাত্র হিন্দু বলে নির্যাতনের কোন প্রতিবাদ করতে পারেনি এই পরিবারটি। ফলে নীরবে সহ্য করতে হচ্ছে দাদন ব্যবসায়ীর এমন অমানবিক অত্যাচার।

বিষয়টি প্রভাত মহন্ত পলাশবাড়ী পৌর মেয়র  গোলাম সরোয়ার প্রধান বিপ্লবকে মৌখিকভাবে জানালে জহুরুল ও রুহুল আমিন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং পুনরায় প্রভাতকে আটকে রাখে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি জানতে পারে পলাশবাড়ী প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রতন তিনি দাদন ব্যবসায়ী রুহল আমিনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে, তিনি প্রভাতকে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করেন। 

এলাকার বেশ কয়েকজন জানান দাদান ব্যবসায়ী রুহুল আমিন ও জহুরুল দাদন ব্যবসার টাকা আদায় করতে তারা অনেকের বাড়ী ঘর, ভিটে মাটি লিখে নিয়েছেন। এলাকায় গড়ে তুলেছেন বিশাল অট্টালিকা। তারা আরো বলেন শত শত সাদা ষ্টাম ও চেক বইয়ের পাতা রয়েছে এই দুই দাদন ব্যবসায়ীর হাতে।এদের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে উদ্ধার করা জরুরি হয়ে পড়ছে।

এদিকে রুহুল আমিন ও জহুরুলের অত্যাচারে যে কোন মুহুর্তে আত্নহত্যা অথবা দেশ ত্যাগ করতে পারে প্রভাত। এমনটাই দাবি করেছেন ভুক্তভোগী প্রভাতের পরিবার।এমতবস্থায় প্রভাতের ভবিষ্যত জীবনের কথা বিবেচনা করে প্রভাতের পরিবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পাশাপাশি থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দাদন ব্যবসায়ী রুহল আমিন  বলেন, ‘আমি সামান্য ব্যাবসা করি এর বেশি কিছু নয়।’ 

প্রকৌশলনিউজ/এসআই