গণমাধ্যমের অস্থিরতা ও সংকট নিরসনে অবিলম্বে ত্রিপক্ষীয় সভা প্রয়োজন
চলতি সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া বেতন ও উৎসব ভাতা পরিশোধের জোরালো দাবি জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে-একাংশ)।
শনিবার বিকালে মে দিবসের আলোচনা সভা ও পরে সন্ধ্যায় ডিইউজের নির্বাহী পরিষদের সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, অনেক সংবাদমাধ্যম করোনা দুর্যোগের মধ্যেও মাসের পর মাস বেতন বকেয়া রেখেছে। ঈদ উৎসব ভাতা পরিশোধেও নানা ধরনের টালবাহানার কথা শোনা যাচ্ছে। এতে সাংবাদিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
সভাপতির বক্তব্যে ডিইউজের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, সংবাদমাধ্যমে অস্থিরতা তৈরির পাঁয়তার চলছে, যা কোন সুখকর অভিজ্ঞতার জন্ম দেবে না। শিল্পে বিরাজমান অস্থিরতা ও সংকট নিরসনে অনিতিবিলম্বে মালিক-সাংবাদিক ও সরকার ত্রিপক্ষীয় সভা প্রয়োজন। এর মাধ্যেম বৈশ্বিক সংক্রমণের সময়ে শিল্পে বিরাজমান সংকট নিরসনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কৌশল নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।
প্রারম্ভরিক বক্তব্যে ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রচার সংখ্যায় এগিয়ে থাকার দাবিদার অনেক সংবাদপত্র উচ্চ হারে সরকারি বিজ্ঞাপন বিল আদায় করছে। হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি ক্রোড়পত্রও। কিন্তু সাংবাদিকদের নায্য বেতন-ভাতা পরিশোধে গড়িমসি চলছে। অনেক প্রতিষ্ঠান মাসের পর মাস বকেয়া রাখছে বেতন। করোনা দুর্যোগের মধ্যেই সাংবাদিক ছাঁটাই করছে, বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এমন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে ডিইউজে চরমভাবে উদ্বিগ্ন।
আলোচনায় অংশ নেন ডিইউজের সহ-সভাপতি এমএ কুদ্দুস, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, কোষাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এ জিহাদুর রহমান জিহাদ, প্রচার সম্পাদক আছাদুজ্জামান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক দুলাল খান, জনকল্যাণ সম্পাদক সোহেলী চৌধুরী, দফতর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস সোহেল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাকিলা পারভীন, রাজু হামিদ, সলিমউল্লাহ সেলিম, এ এম শাহজাহান মিয়া, জোবায়ের রহমান চৌধুরী, জনকণ্ঠ ইউনিট প্রধান রাজন ভট্টাচার্য ও নাগরিক টিভির ইউনিট প্রধান শাহনাজ শারমিন প্রমুখ।
দৈনিক জনকণ্ঠ থেকে অবৈধভাবে ছাঁটাইকৃত সাংবাদিকদের চরিত্র হনের অপতৎপরতায় সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বলা হয়, এ ধরণের হীন প্রচেষ্টা এক ধরণের অস্থিরতা তৈরি করে, যা কোন সংবাদমাধ্যম কর্তৃপক্ষের কাছে কাম্য নয়। এ বিষয়ে সরকারের নীতি নির্ধারক মহলের দৃষ্টি কামনা করছে ঢাকা সংবাদিক ইউনিয়ন।
ঈদ সমাগত। এ সময়ে বেতন-ভাতা পরিশোধে করতে পারবেন না বলে ফেসবুকে একজন সম্পাদকের ঘোষণা প্রদানের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। বলা হয়, সরকারি আনুকূল্য নিয়ে একের পর এক সংবাদপত্র প্রকাশ ও প্রচার করছেন তিনি। নায্য বেতন থেকেও সাংবাদিকদের অবিরাম বঞ্চিত করছেন। যা অনৈতিকই শুধু নয়, প্রচলিত আইনেরও পরিপন্থী। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে ডিইউজে।
মে দিবসের আলোচনা সভা
এরআগে এদিন বিকেলে ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মে দিবসের আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ সংশোধনীসহ অবিলম্বে নবম ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ পূর্ন বাস্তবায়ন ও অবৈধভাবে ছাঁটাইকৃত সাংবাদিকদের স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে পুনর্বহালের দাবি পুর্ণব্যক্ত করেন। সাংবাদিক নেতারা আরও বলেছেন, দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বিকল্প নেই, মহান মে দিবস আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়েছে। জনকন্ঠ, মানবকন্ঠ, আলোকিত বাংলাদেশ, সারাক্ষণ, ইত্তেফাকসহ বেশ কিছু গণমাধ্যমে ছাটাইসহ নতুন করে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে, তা নিরসনে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়।
প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস