ঘূর্ণিঝড় ইয়াস : ক্ষতিগ্রস্ত ১০ হাজার পরিবারের পাশে রেড ক্রিসেন্ট
সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এ ক্ষতিগ্রস্ত দেশের উপকূলীয় সাতটি জেলার ৪৭ টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার পরিবারের পাশে মানবিক সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকরা।
সংস্থাটি বলছে, দেশের সাতটি জেলার ১৮ টি উপজেলার ৪৭ টি ইউনিয়ন এর ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১০ হাজার পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, তারপুলিন ও হাইজিন কিট বিতরণ করেছে। এসব খাবারের মধ্যে আছে চিড়া, চিনি, বিস্কুট, পানি ও খাবার স্যালাইন রয়েছে।
সোসাইটির নব নিযুক্ত মাননীয় চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এটিএম আবদুল ওয়াহ্হাব এর নেতৃত্বে ও ম্যানেজিং বোর্ড সদস্যগনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এ ক্ষতিগ্রস্থ জেলাসমুহে ত্রান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
সোসাইটির জাতীয় সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, করোনাকালিন সময়ে এরকম ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রতিটি ক্ষেত্রে একটু বাড়তি সতর্কতা নিয়ে সোসাইটি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় সোসাইটির ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স টিম, ন্যাশনাল ডিজাস্টার ওয়াটসন রেসপন্স টিম এবং ইউনিট ডিজাস্টার রেসপন্স টিম টিমসহ উপকূলীয় ১৪টি জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের প্রায় ৭৫০০০ স্বেচ্ছাসেবক ও ইউনিট কর্মকর্তাদের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ৭টি জেলায় (ভোলা, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা ও পটুয়াখালী) ইমিনেন্ট ডিআরইএফ এর আওতায় পূর্বাভাস ভিত্তিক কার্যক্রম (এফবিএ) অব্যহত রয়েছে।
এছাড়াও যেসব পরিবার পানিবন্দি রয়েছে তাদের তাৎক্ষণিক খাদ্য চাহিদা মেটাতে শুকনা খাবার, ওরস্যালাইন ও খাবার পানি সরবরাহের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ (সার্জিকাল মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার) প্রদান করা হয়েছে।
সোসাইটির মহাসচিব জনাব মো: ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন বলেন- ‘দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতিমূলক উদ্যোগের ফলে বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে যা সারা বিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশ। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন ঘটছে এবং বেড়েছে দুর্যোগের মাত্রা ও তীব্রতা। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে আমরা যে অভিজ্ঞতা পেয়েছিলাম সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই আজকে কাজ করে যাচ্ছি। আমি আশাকরি যেকোন দুর্যোগ আমরা মোকাবেলা করতে পারব।‘
সোসাইটির ডিজাস্টার রেসপন্স বিভাগের পরিচালক জনাব ইমাম জাফর শিকদার বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের ব্যাপক সাফল্য থাকলেও আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন হুমকি ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হল প্রাকৃতিক, পরিবেশগত ও মানবসৃষ্ট আপদ হতে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি সহনীয় ও গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নামিয়ে আনা। একইসঙ্গে বড় ধরণের দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষম একটি জরুরি সাড়া প্রদান ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।‘
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করে দুর্গত এলাকায় ত্রান ও সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। প্রয়োজনে এই কার্যক্রমের পরিধি আরও বৃদ্ধি করা হবে বলে সোসাইটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রকৌশলনিউজ/এসএআই