‘রয়েল এনফিল্ড’ এর আগমনে উচ্ছ্বাসিত বাইকাররা
সারা পৃথিবীর তরুণেদের স্বপ্নের মোটরবাইক ‘রয়েল এনফিল্ড’ বাংলাদেশের বাজারে আগমনের খবরে মোটরবাইক প্রেমীরা উচ্ছ্বাসিত। এখন শুধু সরকারের অনুমোদন পাবার অপেক্ষা। ইতিমধ্যে দেশীয় শিল্পগ্রুপ ইফাদ ও রয়েল এনফিল্ড কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে কারখানা করতে সম্মত হয়েছে। শুধু অনুমোদন পেলেই উৎপাদনে যাবে আর বাংলাদেশের রাস্তায় শোভা পাবে বিশ্বখ্যাত মোটরবাইকটি।
ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাইকটির কেনার উন্মদনা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছে মোটরবাইকটি কেনার জন্য। তেমনি একজন গণমাধ্যম কর্মী আল্লামা ইকবাল অনিক। তিনি বলেন, আমার দুইটি মোটরসাইকেল আছে। বাংলাদেশের বাজারে এই বাইকের অনুমোদন দিলে আমি দুইটি বিক্রি করে রয়েল এনফিল্ড কিনবো। আমার ‘রয়েল এনফিল্ড’ বাইক খুবই পছন্দের। বাংলাদেশে অনুমতি না থাকায় এতোদিন অপেক্ষায় ছিলাম।
সূত্র জানিয়েছে, ইফাদ রয়েল এনফিল্ডের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে, যার আওতায় তারা বাংলাদেশে রয়েল এনফিল্ডের মোটরসাইকেল বিপণন করবে। পাশাপাশি তারা এই ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেলের কারখানাও করতে চায়। আরো জানা গেছে, গ্রুপটি মীরেরসরাই বা ভালুকাতে কারখানা স্থাপন করতে আগ্রহী। তবে সেক্ষেত্রে ঢাকার অদুরে ভালুকাতেই কারখানা তৈরিতে বেশি পছন্দ ইফাদ গ্রুপের। তবে, অবশ্য সবকিছু নির্ভর করবে মোটরসাইকেল বাজারে ছাড়ার সিসি (ইঞ্জিন ক্ষমতা) সীমা তুলে নেওয়ার ওপর। বাংলাদেশে ১৬৫ সিসির ওপর মোটরসাইকেল বাজার ছাড়ার সুযোগ নেই। অবশ্য এ বিধিতে সংশোধন নিয়ে কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সবার সঙ্গে আলোচনার পর বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, মোটর সাইকেলের যে পলিসি আছে তাতে উৎপাদন করতে না পারলে বাজারজাত করার সম্ভবনা কম। যদি বাইরে থেকে আমদানি করা হয় তবে তার উপরে অনেক টাকা ট্যাক্স পড়বে, যেটা সাধারণ জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।
দেশের ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং’ পণ্যকে ২০২০ সালের বর্ষ পণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে এ খাতে বিশেষ মনোযোগ দিতে চান তিনি।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইডিএফ) ২০২০ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের অধীনে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি করে আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হব।’ তিনি উল্লেখ করেন, বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, অটোমোবাইল, অটোপার্টস, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকসামগ্রী, অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারি, সোলার ফটো-ভল্টিং মডিউল, বিভিন্ন খেলনাসামগ্রীসহ লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে বাংলাদেশ আরও পণ্য উৎপাদন করতে পারে। তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ আকৃষ্টে আমাদের অনেক সুযোগ আছে। লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে আমাদের বিশাল বাজার আছে।’
সেই কথার সূত্র ধরে ইফাদ গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন আহমেদ প্রকৌশলনিউজকে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী চান বাংলাদেশ ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং’ এ উন্নতি করুক। আমরা প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে চাই।
সারাবিশ্বে লাইট ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং’ এর মার্কেট দুই ট্রিলিয়ন ডলার উল্লেখ করে তাসকিন আহমেদ আরো বলেন, আমরা মোটর সাইকেল আমদানি করবো এ স্বপ্ন দেখিনা, আমরা স্বপ্ন দেখি একটা মোটর সাইকেলের ১২শ' কম্পোনেন্ট আছে এগুলো বিশ্বব্যাপী রপ্তানী করবো। অর্থাৎ, আমরা তৈরি করতে চাই।
নিজের দেশে তৈরি করলে এর বিভিন্ন কম্পোনেন্ট তৈরি করা যাবে, ফলে আরো ছোট ছোট কারখানা তৈরি হবে আর হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে বলেও জানান তাসকিন।
তবে, মোটরসাইকেল প্রেমীরা আশা করেন, বাংলাদেশের যেভাবে অর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটেছে তেমনি সরকার ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং’ এ অনুমোদন দিয়ে বিশ্বমানের ‘বাইক’ উৎপাদনকারী দেশে নাম লেখাবে।