দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের
বিশ্ব ব্যাংক দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ২০২০ সালে গড় জিডিপি’র ঐতিহাসিক সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধির তুলনায় ২০২১ সালে ৭ দশমিক ২ শতাংশ এবং ২০২২ সালের ৪ দশমিক ৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধিসহ এই অঞ্চলের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর পূর্বাভাস দিয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে হালনাগাদ আঞ্চলিক এই তথ্য তুলে ধরে বলা হয় তবে, অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ঘাটতি পুষিয়ে নেয়া এবং লাখ লাখ শ্রমিকের চাকরি হারানোর ফলে প্রবৃদ্ধি হবে অসম এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম কোভিড-১৯ এর পূর্বের সময়ের তুলনায় হ্রাস পেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংক বুধবার সর্বশেষ ‘সাউথ এশিয়া ইকোনোমিক ফোকাস সাউথ এশিয়া ভ্যাকসিনেটস’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে ২০২২ সালের মধ্যে এই অঞ্চলে ঐতিহাসিক হারে প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়। বিদ্যুতের ব্যবহার ও গতিশীলতার উপাত্ত থেকে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ঘুরে দাঁড়ানোর পরিষ্কার ইঙ্গিত পাওয়া যায় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এই অঞ্চলের বড় অর্থনীতি ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০ শতাংশেরও বেশি হবে বলে পূর্বভাস দেয়া হয়েছে যা, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দেয়া পূর্বাভাসের তুলনায় ৪ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
প্রত্যাশার চেয়ে বেশি রেমিটেন্স প্রবাহ থাকায় বাংলাদেশ, নেপাল এবং পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি উর্ধ্বোমুখী হওয়ার পূর্বভাস দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২১ সালে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, নেপালের ২০২১-২২ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ৫ দশমিক ১ শতাংশ এবং পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টা ও দ্রুত ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইনের ফলে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া, আর্থিক নীতিমালাসহ অর্থ সংক্রান্ত বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ, লকডাউনের মধ্যেও সরকারের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনীতি ইতিবাচক হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ সেফার বলেন, ‘আমরা দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর পূর্বাভাস দেখে উৎসাহিত হচ্ছি। তবে, করোনা পরিস্থিতি আবারও অবনতির দিকে এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তাই, সতর্কতা অবলম্বন করতে আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত টিকাদান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া এবং সীমিত সম্পদের মধ্যেও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বিনিয়োগ বাড়ানোই হবে নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সোপান।
প্রকৌশল নিউজ/এমএস