বিএসএমএমইউয়ে নতুন ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো: শারফুদ্দিন আহমেদ


প্রকৌশল নিউজ :
বিএসএমএমইউয়ে নতুন ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো: শারফুদ্দিন আহমেদ
  • Font increase
  • Font Decrease

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো: শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর-এর দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি মো: আব্দুল হামিদ তাকে এই নিয়োগ দেন।

আজ ২৯ মার্চ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ আবদুল কাদের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়,‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর এঁর অনুমোদনক্রমে “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯৮ এর ১২ ধারা অনুসারে অধ্যাপক ডা. মো: শারফুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়-কে ভাইস-চ্যান্সেলর পদে নিয়োগ করা হলো। ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে তাঁর নিযুক্তির মেয়াদ হবে ৩ (তিন) বছর । জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।”

বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সাবেক মহাসচিব, নতুন ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিভেনটিভ এন্ড সোস্যাল মেডিসিন অনুষদের ডীন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিএসএমএমইউয়ে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অধ্যাপক ডা. মো: শারফুদ্দিন আহমেদ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। অধ্যাপক ডা. মো: শারফুদ্দিন আহমেদ এর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার খায়েরহাটে।

চোখের রোগসমূহের চিকিৎসা, প্রতিরোধসহ কমিউনিটি অফথালমোলজিতে অসামান্য অবদান রাখায় বিশিষ্ট চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুতে সার্ক একাডেমি অফ অফথালমোলজির ১৪তম সম্মেলনে পিভিপি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ ১৯৫৬ সালের ৭ই অক্টোবর গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার খারহাট গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম আলহাজ শামসুদ্দিন আহমেদ, মাতা হোসনে আরা বেগম। ব্যক্তিজীবনে তিনি তিন পুত্র সন্তানের জনক। বড় ছেলে ডা. তাজবীর আহমেদ (চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও পিএইচডি অধ্যয়নরত, টোকিও জাপান), মেজো ছেলে ডা. তানভীর আহমেদ (এম. ও ঢাকা শিশু হাসপাতাল), ছোট ছেলে তাহমিদ আহমেদ সাদাত (প্রকৌশল ছাত্র), সহধর্মিনী ডা. নাফিজা আহমেদ, অধ্যাপক, ডার্মাটোলজি (অবসরপ্রাপ্ত), সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ। তিনি ১৯৮২ সালে বিশেষ বিসিএস এর মাধ্যমে সরকারী চাকুরীতে যোগদানের পর সহকারী সার্জন, মেডিক্যাল অফিসার, রেজিস্ট্রার, রেসিডেন্ট সার্জন, ১৯৯১ সাল থেকে সহকারী অধ্যাপক (চক্ষু) হিসাবে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৮ সালের ২৪ শে মার্চ তিনি সহকারী অধ্যাপক (চক্ষু) হিসাবে তৎকালীন আই পি জি এম আর এ যোগদান করেন। পরবর্তীতে ৩০শে এপ্রিল ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ সালে সহযোগী অধ্যাপক ও ২০০৯ সালে তিনি অধ্যাপক পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান (২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত) এবং বর্তমানে কমিউনিটি অফথালমোলজী বিভাগের চেয়ারম্যান হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। ০৪/০৭/২০১৯ ইং তারিখে তিনি প্রথম গ্রেড প্রাপ্ত হন। প্রায় ১০০ টি’র মত বি এম ডি সি স্বীকৃত জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক প্রকাশনা রয়েছে ২০১৩ থেকে ২০২১ পর্যন্ত। বাংলায় চক্ষু বিষয়ক ৩টি ও ইংরেজীতে ২টি বই রয়েছে।

তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫ থেকে ২০১৮ ইং সাল পর্যন্ত প্রো-ভিসি (প্রশাসন), সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ বরিশাল ১৯৭৮-১৯৭৯, সদস্য কার্যকরী পরিষদ বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল ও সাবেক মহাসচিব বিএমএ ২০০৯-২০১২, তিনি এই মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন। তিনি প্রথম ভিসি অধ্যাপক এম এ কাদেরীর সময় প্রথমে ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) (ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার) হিসাবে এ দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি পরিচালক হাসপাতাল হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পাবলিক হেলথ ফ্যাকাল্টির ডীনের দায়িত্ব ও পালন করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি সিন্ডিকেট সদস্য ও একাডেমিক কাউন্সিলের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি অফথালমোলজীক্যাল সোসাইট অব বাংলাদেশ এর পরপর তিনবার নির্বাচিত সভাপতি হিসাবে দায়িত্বপালনরত। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বড় দুই ভাই মুক্তিযোদ্ধার সাথে তিনিও মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ সালে দপ্তর সম্পাদক, কেন্দ্রীয় বিএমএ, ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক, বিএমএ, ১৯৯৬ থেকে ২০০২ সালে কোষাধ্যক্ষ, ১৯৯৬ সালে ভোট ও ভাতের অধিকার আন্দোলনে কর্মকর্তা সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি সক্রিয় নেতা, ১৯৯৩ সালে সেন্ট্রাল স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ-এর প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। তিনি বর্তমানে কেন্দ্রীয় স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এর ইসি সদস্য। এক/এগারো পরবর্তী সময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির লক্ষ্যে সকল আন্দোলন কর্মসূচীতে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করে তৎকালীন সরকারের হয়রানির শিকার হন।

প্রকৌশল নিউজ/এমএস