রুশ হামলায় আক্রান্ত ইউক্রেন


প্রকৌশল প্রতিবেদক :
রুশ হামলায় আক্রান্ত ইউক্রেন
  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বকে চমকে দিয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টা-৯টা নাগাদ একটি টেলিভিশন বার্তায় ইউক্রেনে হামলার কথা ঘোষণা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অবশেষে রুশ হামলায় আক্রান্ত ইউক্রেন। হুমকি-ধামকির পর সত্যি সত্যিই শুরু হলো যুদ্ধ। কৃষ্ণসাগর তীরে ঘণীভূত রণ ডঙ্কায় কাঁপছে বিশ্ব।

আক্রমণের প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাশিয়ার ৫০ ও ইউক্রেনের ৪০ সেনা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে কিয়েভ প্রশাসন। এছাড়া, দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন বেসামরিক নাগরিক। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন কিয়েভ প্রশাসনের কর্মকর্তা জেলেনস্কির ওলেক্সি আরেস্টোভিচ।

ইউক্রেনে রুশ হামলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে বৈঠক চলছে জাতিসংঘে।

এদিকে, অর্ধশত রুশ সেনা নিহত হওয়ার পাশাপাশি আক্রমণকারীদের চারটি ট্যাংক ও ছয়টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।

দুপুরে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী এক বিবৃতি জানিয়েছে, দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভে চারটি ট্যাংক ধ্বংস করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এছাড়া, বিচ্ছিন্নতাবাদী লুহানস্ক অঞ্চলের একটি শহরে ৫০ রুশ সেনাকে হত্যা এবং ছয়টি সামরিক আকাশযান ধ্বংস করা হয়েছে। অবশ্য রাশিয়া এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

নব্য-জার নামে পরিচিত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘোষণার মিনিট খানেকের মধ্যেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। অন্যান্য শহরেও একের পর এক বিস্ফোরণের খবর এসেছে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়।

পুতিনের ভাষণে যুদ্ধ ঘোষণায় ইউক্রেনের সেনাকে অস্ত্র ছাড়ার জন্য বলা হয়েছে। রক্তক্ষয় হলে তার সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে ইউক্রেনকেই, বলেন পুতিন। এদিকে জাতিসংঘের জরুরি অধিবেশনে ইউক্রেনের প্রতিনিধি বললেন, ‘এখন অস্ত্র সংবরণের কথা বলার সময় পেরিয়ে গিয়েছে। আমার দেশে রাশিয়ার হামলা শুরু হয়ে গিয়েছে।’

বিশ্বব্যাপী প্রবল ও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হয়েছে রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেন আক্রমণের ঘটনায়। 'বিনা প্ররোচনায় হামলার দাম দিতে হবে রাশিয়াকে', কড়া প্রতিক্রিয়ায় জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জাতিসংঘের মহাসচিব রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন। জরুরি অধিবেশনে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন আপনাকে অনুরোধ, দয়া করে আপনার বাহিনীকে আটকান। সেনা ফিরিয়ে নিন। দয়া করে শান্তি বজায় রাখুন।’

তাৎপর্যপূর্ণভাবে, রুশ কর্তৃক ইউক্রেন আক্রমণের মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল আমেরিকা ও ইউরোপ। কিন্তু তাতেও মস্কোকে সেনা অভিযান থেকে নিরস্ত করা গেল না। বরং অকস্মাৎ প্রবল যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছে কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ইউরোপীয় রাষ্ট্র ইউক্রেনে। বিদেশি বিমান দেশটির আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারছে না। হাজার হাজার বিদেশি আটকে আছেন দেশটিকে।

ইউক্রেন অতীতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও জার শাসনামনে রাশিয়া কর্তৃক আক্রান্ত ও অবনত হয়েছে। সেই দখলদারিত্ব আবার নতুন করে কায়েমের লিপ্সায় রুশ প্রেসিডেন্টের এই আগ্রাসনকে চিহ্নিত করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।