গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি ধরে রাখার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
ঘুড়ি উৎসবের মতো আবহমান গ্রাম বাংলার সংস্কৃতিকে ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ঘুড়ি উৎসব সংস্কৃতিরই একটি অংশ। এই উৎসবের মতো আমাদের সব উৎসবকে ধারণ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ধুপখোলা মাঠে ঢাকা সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ঘুড়ি উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের আবহমান সংস্কৃতির অংশ হচ্ছে ঘুড়ি উৎসব। কিন্তু আকাশ সংস্কৃতির হিংস্র থাবায় আমাদের অনেক সংস্কৃতি এখন হুমকির মুখে। ঘুড়ি উৎসব পুরান ঢাকার ঐতিহ্যের পাশাপাশি দেশের ঐতিহ্য।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে আগে বিয়ে ও গায়ে হলুদ উৎসবে দেশীয় গান গাওয়া হতো। আমাদের ছেলে-মেয়েরা বাংলার সাজসজ্জা নিয়েই হাজির হতো। কিন্তু ধীরে ধীরে এসব বদলে যাচ্ছে। এখন এসব উৎসবে বাংলা গান না হয়ে হিন্দি গান হয় এবং সেখানে সাজগোজও ইন্ডিয়ান সিরিয়াল দেখে বদলে যাচ্ছে। এগুলো আমাদের সংস্কৃতিতে প্রচণ্ড আঘাত আনছে। তাই আমাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের কিশোর-তরুণ সবাই ঘুড়ি উড়িয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ঘুড়ি ওড়ানোর সুযোগ বড় শহরে কমে গেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে খেলার মাঠ সেভাবে নেই। ছাদে উঠে ঘুড়ি ওড়ানোর বিষয়টাও অনেকাংশে সংকুচিত হয়ে গেছে। যে কারণে আমাদের তরুণরা এখন আর ঘুড়ি ওড়াতে পারে না।
হাছান মাহমুদ বলেন, এ ঘুড়ি ওড়ানোর মধ্যে যে কী মজা ও উত্তেজনা সেটা আসলে যারা ঘুড়ি ওড়াননি, তারা বুঝতে পারবেন না। এজন্য আমি ধন্যবাদ জানাই এ উৎসব যারা আয়োজন করেছেন তাদের। আসলে আমাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে এ সব উৎসবের মধ্য দিয়ে চলমান করোনা মহামারির মধ্যেও আমাদের উৎসাহিত করা, তরুণদের উৎসাহিত করা— এগুলো কিন্তু উৎসাহ উদ্দীপনার সংকটকে পাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়তা করে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সমগ্র পৃথিবী যখন করোনা মহামারিতে আক্রান্ত, তখন প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ও দেশের জনগণের শক্তিতে কোনও কাজ থেমে নেই, সবকিছু চলছে। এটির অত্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে— প্রধানমন্ত্রী ও প্রচুর জীবনীশক্তি সম্পন্ন জনগোষ্ঠী এ সংকটকে মোকাবিলা করছে।
ড. হাছান বলেন, ‘আমি প্রায়ই টেলিভিশনে দেখতাম পুরান ঢাকায় ঘুড়ি উৎসব হয়। সেখানে উৎসব মুখর পরিবেশে রঙ- বেরঙের ঘুড়ি ওড়ানো হয়। সেটি শুধু টেলিভিশনেই দেখেছি, এবার আসার সৌভাগ্য হয়েছে। ছোট বেলায় ঘুড়ি ওড়াতাম, এখনতো আর ঘুড়ি ওড়ানো যাচ্ছে না। তাই ঘুড়ি উৎসবে আসার সুযোগটা মিস করিনি। সেজন্য আমি অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে এখানে এসেছি।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি, দফতর সস্পাদক রিয়াজ উদ্দিন ইলিয়াস, ঢাকা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি শামীম সিদ্দিকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।