ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের সঙ্গে পুলিশের ফের সংঘর্ষ, নিহত ২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ফের হেফাজতে ইসলামের হরতালকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত দুই দজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রোববার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে খাটিহাতা হাইওয়ে থানায় হামলা চালায় হরতাল সমর্থকরা। এসময় পুলিশ গুলি চালায়।
সরাইলে সকাল থেকেই হরতাল সমর্থকরা লাঠিসোঁটা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। নিয়ন্ত্রণে রাখে পুরো সড়ক-মহাসড়ক।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত উপজেলার বুধল ইউনিয়নের কালন মিয়া (২৩) এবং কুট্টাপাড়া গ্রামের আল আমীন (১২) নামে দুই জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
কালন মিয়ার বড় ভাই মাওলানা আবদুর রহিম জানায়, পুলিশের গুলিতে তার ভাই নিহত হয়েছেন। তার লাশ বর্তমানে বাড়িতেই আছে।
এদিকে আল আমীনের মৃত্যুর খবরটি স্থানীয় ইউপি সদস্য সাদেক মিয়া নিশ্চিত করে জানায় আহত অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার আধা ঘণ্টা পর যায় সে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত আলী দুজনের মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, তরুণের লাশ তাঁর স্বজনেরা নিয়ে গেছেন। আর হাসপাতালে শিশুটির মৃত্যু হয়। তবে এখনও পুলিশ দুই জনের নিহতের ঘটনার সত্যতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে হরতাল–সমর্থকরা সরাইল বিশ্বরোড এলাকায় অবস্থিত খাটিহাতা হাইওয়ে থানায় হামলা করে। এসময় তারা থানায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গুলি চালায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) আনিছুর রহমান বলেন, ‘সরাইল উপজেলায় উত্তপ্ত অবস্থা থাকলেও মহাসড়ক ছাড়া কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। হাইওয়ে থানায় হামলায় অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। সেখানকার পুরো তথ্য এখনো জানা যায়নি।’
তবে বেলা পৌনে একটার দিকে এখন পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ আছে জানায় সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক।
সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেখা যায় কয়েক হাজার মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ও অন্য লোকজন সরাইল বিশ্বরোড মোড়, কুট্টাপাড়া মোড়, বারিউড়া, শাহবাজপুর, বেড়তলা এবং সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলা সদরের উচালিয়াপাড়া মোড় কালীকচ্ছ বাজার এলাকায় লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নিয়েছে।
এসময় সড়কের বিভিন্নস্থানে গাছের গুঁড়ি, বৈদ্যুতিক খুঁটি, গাছপালা ফেলে এবং টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। হরতাল সমর্থকরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুনেও ভাঙচুর চালায়।