লকডাউন : ঈদের আগে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত
দেশব্যাপী করোনার ঊর্ধ্বগতির কারণে চলমান সর্বাত্মক লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তবে ঈদে লকডাউন থাকবে কিনা সে বিষয়ে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
ঈদের আগে পরিস্থিতি বিবেচনায় কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এমন প্রশ্নে সোমবার গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত আমরা দেখছি করোনা সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে ওঠা-নামা করছে। তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আগামী ১২ অথবা ১৩ তারিখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত দিতে পারব। গভীরভাবেই এ বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ঈদের সময় নিয়ন্ত্রণ করাটা খুব কঠিন একটা কাজ। ওই সময়টাতে কী কী থাকবে, কী করলে ভালো হবে, কীভাবে করলে ভালো হবে, সে বিষয়ে সরকার পরিকল্পনা করছে। সময় হলে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত জানাতে পারব। লকডাউনের সুফলটা ধরে রাখতে ওই সময়টাতেও চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
তিনি বলেন, গতবার মানুষ যেভাবে বাড়িতে গেল, তার প্রতিফলন আমরা পাচ্ছি। সেই বিষয়টি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই এবার সে বিষয়ে সরকার পরিকল্পনা করছে।সেই বিষয়ে আমরা চেষ্টা করছি যে কীভাবে ওই পরিস্থিতি আমরা মোকাবেলা করব। কারণ যেভাবে ব্যাপকভাবে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে, তা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তাই যদি ২২ তারিখে ঈদ হয়, তবে আমাদের তৃতীয় সপ্তাহে কী করা উচিত, তা নিয়ে ভাবতে হবে। আমাদের পর্যবেক্ষক কমিটি প্রথম সপ্তাহ ও দ্বিতীয় সপ্তাহ দেখবে। তারপর আমরা আবার বসব। তখন পরিস্থিতি বুঝে আমাদের জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির পর্যবেক্ষণে থাকবে। পরিস্থিতি বুঝে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের যে বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন, তাদের পরামর্শ এবং আমাদের টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। আমাদের এ পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হচ্ছে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা। তাই সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বিধিনিষেধ বাড়ানো হয়েছে।
দেশে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করলে গেল ১ জুন থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে শুরু থেকে পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি মাঠে রয়েছে বিজিবি ও সেনাবাহিনী। লকডাউনের শুরু থেকেই বিভিন্ন জায়গায় টহল দিতে দেখা গেছে তাদের। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্টে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অযৌক্তিক কারণে কেউ বাইরে বের হলে গত তিন দিনের মতো রোববার চতুর্থ দিনেও ভ্রাম্যমাণ আদালত গ্রেফতার ও জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিতরা পরিচয়পত্র দেখানো ও প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তল্লাশির সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালে, তারা তাদের গন্তব্যে বা কর্মস্থলে যেতে পারছেন।
এর আগে রোববার দেশের চলমান সর্বাত্মক লকডাউন ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করার কথা জানায় কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরার্মশক কমিটি। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, যে পরামর্শের ওপর ভিত্তি করে সরকার এই কঠোর লকডাউন দিলো, সেখানে জাতীয় কমিটি ১৫ দিনের কথা বলেছিল। ১৫ দিনের নিচেতো কোনোভাবেই বৈজ্ঞানিকভাবে কিছুই কাজ হবে না।