শত মানুষের জীবন বাঁচিয়ে না ফেরার দেশে পাইলট নওশাদ


প্রকৌশল প্রতিবেদক :
শত মানুষের জীবন বাঁচিয়ে না ফেরার দেশে পাইলট নওশাদ
  • Font increase
  • Font Decrease

না ফেরার দেশে চলে গেলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউম। টানা ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় কোমায় থাকার পর আজ সোমবার স্থানীয় সময় ১০টা ৪৫ মিনিটে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেন ভারতের নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ক্যাপ্টেন নওশাদ ক্লিনিক্যালি ডেড হলেও স্বজনরা লাইফ সাপোর্ট খুলে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তারা। এরপর সোমবার তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দিয়ে নওশাদকে মৃত ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গতকাল রবিবার (২৯ আগস্ট) ক্যাপ্টেন নওশাদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। বিমানের একটি সূত্র জানায়, নাগপুরের হোপ হাসপাতালে কোমায় থাকা ক্যাপ্টেন নওশাদ ক্লিনিক্যালি ডেড। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দিতে অনুমতির অপেক্ষা করছে। কিন্তু পাইলটের আত্মীয়-স্বজন এখনই লাইফ সাপোর্ট খুলে দিতে চাচ্ছেন না। তাদের দাবি, নতুন করে মেডিকেল বোর্ড বসানো হোক। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তারাই সিদ্ধান্ত দিক। আত্মীয়-স্বজনদের এ দাবিতে বিমান কর্তৃপক্ষও সায় দেয়।

এর আগে, গত শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকালে ওমানের মাস্কাট থেকে বিজি-০২২ ফ্লাইটটি নিয়ে ঢাকা আসার পথে ভারতের আকাশে থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন নওশাদ হার্ট অ্যাটাক করেন। গত শনিবার (২৮ আগস্ট) রাতে তিনি কোমায় চলে যান।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা তাহেরা খন্দকার বলেছিলেন, মাঝ আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়লে সাথে সাথেই নওশাদ কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে জরুরি অবতরণের অনুরোধ জানান। একই সময়ে তিনি কো-পাইলটের কাছে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন। কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বিমানটিকে নিকটস্থ নাগপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার নির্দেশ দিলে কো-পাইলটই বিমানটিকে অবতরণ করান। বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজটির ১২৪ জন যাত্রীর প্রত্যেকেই নিরাপদে ছিলেন। জরুরি অবতরণের পর ক্যাপ্টেন নওশাদকে নাগপুরের হোপ হাসপাতালে নেয়া হয়। তার এনজিওগ্রাম করা হয়।

বিমান সূত্র জানায়, ক্যাপ্টেন নওশাদ একজন দক্ষ পাইলট। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়া সত্ত্বেও তিনি দক্ষ হাতে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। তার প্রেসার বেড়ে যাওয়ায় মাথায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। শনিবার রাতেই ক্যাপ্টেন নওশাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।