সংকট মোকাবিলায় ১ হাজার মিলিয়ন ডলার সংগ্রহে নেমেছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলাসহ ভবিষ্যত জরুরী পরিস্থিতি মোকাবিলায় পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অতিরিক্ত ১ হাজার মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সাপোর্ট সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ জাতীয় সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জামালপুর-৫ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মো. মোজাফ্ফর হোসেনের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে একথা জানান। প্রশ্নোত্তর পর্বটি টেবিলে উত্থাপিত হয়। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাজেট সাপোর্ট শিল্প কারখানা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা প্রদান এবং সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় করা হবে।
এছাড়াও কোভিড-১৯ জনিত অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৫শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সাপোর্ট হিসেবে গ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের আপামর জনগণের জন্য সুপরিকল্পিত আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনাসহ জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বাস্তবায়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা, সুদুরপ্রসারী কার্যক্রম ও গঠনমূলক পদক্ষেপের ফলশ্রুতিতেই বাংলাদেশ বিগত ১৩ বছরে সর্বক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর আস্থা পুণর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই সাফল্যের ধারাকে অব্যাহত রেখে টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উুন্নত দেশে উন্নীত হবে ইনশাল্লাহ।’
আওয়ামী লীগের আরেক সদস্য নওগাঁ-২ আসনের মো. শহীদুজ্জামান সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এ পর্যন্ত সারাদেশে ৩৫ লাখ ৫২ হাজার ৩৪০ জন গৃহহীনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘর নির্মাণের মাধ্যমে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পর্যায়ক্রমে পুনর্বাসন করা হবে এবং সারাদেশে গৃহহীনদের জন্য বাড়ি নির্মাণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
‘ভূমিহীন-গৃহহীন-শিকড়হীনদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে এমনকি যেখানে উপযুক্ত খাশ জমি পাওয়া যায় না সেখানে জমি সংগ্রহ করে পুণর্বাসন করা হচ্ছে,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার সরকার চিরকালের জন্য ‘থাকার জায়গা নেই’ শব্দটি বাদ দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, বসতি স্থাপনকারী পরিবার ও তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মানবসম্পদে রূপান্তরিত করে বাংলাদেশকে সামগ্রিকভাবে সমৃদ্ধ করা হচ্ছে।
সরকারি দলের এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে উৎপাদন বেড়ে ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ধান ও সবজি উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, আম ও আলু উৎপাদনে সপ্তম, চা উৎপাদনে চতুর্থ স্থানের পাশাপাশি ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে।
সরকারি দলের মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের ৪৩টি জেলা রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় রয়েছে। রেলওয়ের যেসব প্রকল্প চলমান আছে তা বাস্তবায়িত হলে আরও ১৯টি জেলা রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। এছাড়াও ৩০ বছরব্যাপী মাস্টারপ্ল্যান সম্পন্ন হলে বাকি জেলাগুলোও রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে।