মোহাম্মদ নাসিম ছিলেন দুঃসময়ের কাণ্ডারী : নানক
মোহাম্মদ নাসিম ছিলেন দুঃসময়ের কান্ডারি। দল ও দেশের দুঃসময়ে তিনি সামনে থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন এবং সংকট কাটাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।
মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে মোহাম্মদ নাসিম’র ১ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সিরাজগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নানক বলেন, মোহাম্মদ নাসিমের অসামান্য সাংগঠনিক দক্ষতা এবং নেতৃত্বগুণ আমাদের মুগ্ধ করেছে। বাস্তব জীবনে তিনি ছিলেন কল্যাণমুখী চিন্তার অধিকারী। সবসময় তার এলাকা সিরাজগঞ্জের উন্নয়নে চিন্তা করতেন। সময়-সুযোগ পেলেই নিজ এলাকায় ছুটে যেতেন। করোনার সময়ও আমাদের নিষেধ উপেক্ষা করে তিনি সিরাজগঞ্জে ছুটে গিয়েছেন এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন। তার এই অকাল চলে যাওয়ার ক্ষতি কোনোভাবেই পুষিয়ে ওঠার মতো নয়। তার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বস্ত সহযোগী হারিয়েছেন। আমরাও একজন অভিভাবক হারিয়েছি। তিনি বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনাকালেও দেশ বড় ধরনের বাধার মুখে পড়েনি। যেখানে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত করোনার আঘাতে তছনছ হয়ে গিয়েছে। এরপরও দেশকে পিছিয়ে নিতে বিএনপিসহ বিভিন্ন অপশক্তি নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে।
আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, মোহাম্মদ নাসিম তার বাবা মনসুর আলীর মতোই আওয়ামী লীগের জন্য নির্ভীক সৈনিক ছিলেন। তিনি কোনোদিন কারো সঙ্গে আপোষ করেনি। তিনি বলেন, মোহাম্মদ নাসিম আওয়ামী লীগ ও দেশের মানুষের কাছে থেকে চলে গেছেন। তবে তার চলে যাওয়ায় জাতীয় রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাছে ছিলেন বিশ্বস্ত নেতা। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা থাকবে, ততদিন মোহাম্মদ নাসিম আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন। তিনি বলেন, নাসিম ভাই থাকাকালীন ১৪ দলের সব নেতাকর্মীদেরকে সুসংগঠিত করে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তিনি আরো বলেন, মোহাম্মদ নাসিম ছিলেন একজন পরিশ্রমী নেতা। তিনি সব নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা করতেন। বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলীয় থাকাকালীন সব আন্দোলন-সংগ্রামে তার ভূমিকা ছিল অপরিহার্য। সেসময় আওয়ামী লীগের কর্মীদের বিভিন্নভাবে পর্রামশ দিতেন এবং সবসময় সামনের কাতারে থেকে নেতাকর্মীদের নিরাপদে রাখার চেষ্টা করতেন। এজন্য পুলিশের কাছে তিনি বহুবার নির্যাতিত হয়েছেন। তিনি ছিলেন কর্মীবান্ধব নেতা। তাই মোহাম্মদ নাসিম কর্মীদের যথাযথভাবে মূল্যায়ন করে দলের জন্য সুসংগঠিত করতেন। এমনকি, যখন তিনি যে কর্মীকে কাছে পেতেন তাকেই হাইলাইটস করতেন, তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন।
স্মরণ সভায় সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় বাবার স্মৃতি স্মরণে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, বাবা সবসময়ই সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। করোনার মধ্যেও নিষেধ না শুনে সাধারণ মানুষের খোঁজখবর নিতে ছুটে গিয়েছেন। এরপর তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠলেও পরে আবার স্ট্রোক করেন এবং এই জটিলতায় তিনি মারা যান। জীবনের পুরোটা সময় তিনি সাধারণ মানুষের জন্য এবং দেশের জন্য কাজ করেছেন।
সংগঠনের সহ-সভাপতি তৈমুর ফারুক তুষার এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রনি’র সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন।
আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ, সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডল, সংগঠনের দফতর সম্পাদক হাসিবুল হাসানসহ অন্য নেতারা।
প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস