বিএনপি নিজেদের অজান্তেই শোকের মিছিল করছে : কাদের
বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে রাজধানীতে শান্তি সমাবেশ করছে আওয়ামী লীগ। সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি কালো মিছিল করছে কেন? তাদের কোন নেতা মারা গেছে? আন্দোলনের বারোটা বাজিয়ে এখন বিএনপি নেতারা নিজেদের অজান্তেই শোকের মিছিল করছে। আন্দোলনের পতাকা হলো লাল-সবুজ। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীকের প্রতি তাদের কোনো দরদ নেই। যে মিছিলে জনগণ নেই সেই মিছিল গণমিছিল হয় কী করে?
গতকাল বিকেলে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মিছিল মানেই সারা শহরে মিছিল আর মিছিল। আপনারা মিছিল দেখবেন এক তারিখ এবং দুই তারিখে। আমরা বিজয়ের পতাকা নিয়ে মিছিল করব, বিএনপির মতো শোকের কালো পতাকা নিয়ে নয়।’
তিনি বলেন,‘ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করছি। আজকে বিএনপি নেতাদের গলা শুকিয়ে গেছে। তাদের গলায় আর জোর নেই। তাদের সমাবেশে আস্তে আস্তে লোক কমে যাচ্ছে। আন্দোলনের মরা গাঙে জোয়ার আটকে গেছে। মরা গাঙে ঢেউ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির বাজার ভাঙা হাটের মতো। ভাঙা হাঁট আর জমে না। ডিসেম্বরে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় বসবে, দেশ চালাবেন, তারেক জিয়া দেশে আসবে, কোথায় গেল এসব লাফালাফি? গোলাপবাগের গরুর হাটে গিয়ে তাদের লাফালাফি শেষ। তারপর পদযাত্রা থেকে শুরু করে বিএনপি এসব করেও আন্দোলন জমাতে পারেনি।’
ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন অনেক দূরে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি দিনের বেলায় জাগরণের স্বপ্ন দেখছে৷ তারা দিবাস্বপ্ন দেখছে। এদেশের শতকরা ৭০ শতাংশ মানুষ যাকে ভালোবাসে, যাকে ভোট দিতে চায়, তারা (আওয়ামী লীগ) কেন ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে? শেখ হাসিনা কেন বিদায় নেবেন? বিদেশি নেতারা শেখ হাসিনাকে মানবতার মা বলেছেন। তিনি অভিভাবকের মতো বর্ডার খুলে দিয়েছেন৷ আজকে ১৩ লাখ রোহিঙ্গা আমাদের এখানে বসবাস করছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি বসে বসে স্বপ্ন দেখে, বিএনপি নিষেধাজ্ঞার আতঙ্ক ছড়ায়। বিএনপিরও তো নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা দরকার। বিএনপির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় না কেন? সে প্রশ্ন আমরা করতে চাই। আজকে বঙ্গবন্ধুর খুনিরা বড় বড় দেশে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। তারা জাতির পিতার হত্যাকারীদের কেন ফিরিয়ে দিচ্ছে না, এটা কোন দেশের গণতন্ত্র?’
রোহিঙ্গারা দেশের ‘বোঝা’ হয়ে রয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেউ সাহায্য করে না, শুধু মুখে সুন্দর সুন্দর কথা বলে। তারা রোহিঙ্গাদের জন্য মায়া কান্না কাটে। তারা তাদের দেশে অভিবাসীদের জায়গা দিতে পারে না। রোহিঙ্গাদের জন্য আমাদের দেশের অন্যতম সুন্দর জায়গা কক্সবাজারের জনজীবন আজ বিপন্নপ্রায়। আমাদের ট্যুরিজম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বিদেশিরা মুখে সুন্দর সুন্দর বাণী উচ্চারণ করে, আমাদের নেত্রীর প্রশংসা করে, কিন্তু বাস্তবে সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসে না।’
এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন ও কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম।
ওই দিন বেলা ৩টার দিকে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে দেরি হয়। এর আগে সমাবেশস্থলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই নেতাকর্মীরা বৃষ্টিতে ভিজে সমাবেশ স্থলে আসতে থাকেন। ব্যানার, ফেস্টুন আর মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ।