সাকিব-মাহামুদ যাদুদে উইন্ডিজকে উড়িয়ে লিডে টাইগাররা
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে টাইগার শিবির। ফলে সিরিজে ১-০তে লিডে রয়েছে টাইগাররা।
টসে হেরে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করা ক্যারিবীয়রা সাকিব-মাহমুদদের দাপুটে বোলিংয়ে মাত্র ১২২ রানে গুটিয়ে যায়। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩৩.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌছে যায় টাইগাররা।
মাত্র ১২৩ রানের স্বল্প লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ভালো শুরু করে। তবে উইকেটে থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানরা বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। টাইগারদের দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। দুজনে মিলে ৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটিও গড়েছিলেন। ভালো খেলেও ক্যারিবীয় স্পিনার আকিল হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন লিটন। বিদায়ের আগে এই ডানহাতির ব্যাট থেকে আসে ১৪ রান। ৩৮ বল স্থায়ী এই ইনিংসটি ২টি চারে সাজানো। এরপর শান্তও মাত্র এক রানে শিকার হয়েছেন আকিলের।
দলীয় ২৩তম ওভারে ফিফটি বঞ্চিত হয়ে বিদায় নেন তামিম। দলের ৮৩ রানের মাথায় জেসন মোহাম্মদের বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি। ৬৯ বলে ৭টি চারে এই ওপেনার ৪৪ করেন।
২৮তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ১০৫ রানের মাথায় আকিল হোসেনের বলে বোল্ড হন সাকিব আল হাসান। ৪৩ বলে ১৯ করেন সাকিব। তবে মুশফিকুর রহিম ১৯ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৯ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জেতান।
টসে জিতে এর আগে ফিল্ডিং বেছে নেন টাইগারদের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
এর আগে সাকিবের ঘূর্ণি, অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমানের সিমিং বোলিংয়ে মাত্র ১২২ রানেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৩২.২ ওভারেই শেষ হয় ক্যারিবীয়দের ইনিংস। টাইগারদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এটি উইন্ডিজদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর। এর আগে ২০১১ সালে চট্টগ্রামে ৬১ রানে অলআউট হয়েছিল দলটি।
বোলিংয়ে নেমে দুই ক্যারিবীয় ওপেনার সুনীল অ্যামব্রিস ও জোসুয়া ডা সিলভাকে বিদায় করেন মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর ঘূর্ণির পসরা সাজিয়ে বসেন সাকিব। প্রায় দেড় বছর পর ওয়ানডে খেলতে নেমে চারটি উইকেট তুলে নেন তিনি। তিনে নামা আন্দ্রে ম্যাকার্থিকে বোল্ড করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। এটা আবার ঘরের মাটিতে তার ১৫০তম উইকেট।
নিজের চতুর্থ ও ইনিংসের ১৬তম ওভারের শেষ বলে উইন্ডিজের অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন সাকিব। এরপর নিজের পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলেই এনক্রুমাহ বোনেরকে (০) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন বাঁহাতি স্পিনার। পরে লেজের ব্যাটসম্যান আলজারি জোসেফকেও ফেরান তিনি। সাকিব এদিন ৭.২ ওভারে ৮ রানে ৪ উইকেট তুলে নেন। ছিল ২টি মেডেন। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এ যাবৎ খেলা ওয়ানডেতে এটি বাংলাদেশি কোনো বোলারের সেরা বোলিং। ম্যাচ সেরাও হয়েছেন এই তারকা।
সাকিবের পর উইকেটে তাণ্ডব চালান অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ। নিজের পঞ্চম ওভারে এসে বাজিমাত করেন তিনি। ওভারের প্রথম দুই বলেই উইকেট তুলে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান। দলীয় ৩০তম ওভারে রোভম্যান পাওয়েলকে ২৮ রানে মুশফিকের ক্যাচে ফেরানের পর পরের বলে নতুন ব্যাটসম্যান রেইমন রেইফারকে এলবির ফাঁদে ফেলেন। এক ওভার পরেই ব্যক্তিগত ৪০ রানে থাকা কায়েল মায়ার্সকে লিটন দাশের ক্যাচে ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ।
আকেল হোসেনকে বিদায় করে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন ডানহাতি পেসার মাহমুদ। আর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে জোসেফকে ফেরান সাকিব।
মাহমুদ ৬ ওভারে এক মেডেনসহ ২৮ রানে ৩ উইকেট নেন। টাইগারদের অভিষিক্ত কোনো বোলারের এটি দ্বিতীয় সেরা বোলিং। এর আগে ২০১৪ সালে তাসকিন আহমেদ ভারতের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচের ২৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন।