মধুখালী-মাগুরা রেলপথ নির্মাণ কাজ নিদিষ্ট সময়েই শেষ করার আশা
মাগুরা জেলাকে রেল লাইনের মাধ্যমে রাজধানীর সাথে যুক্ত করতে সরকারের নেওয়া প্রকল্পের কাজে আশানূরুপ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণ শেষ ও আগামী মাসেই প্রকল্পের কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে। সবকিছূ ঠিক থাকলে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে।
রেল সূত্রে জানা গেছে, বাস্তবায়নাধীন ‘মধুখালী হতে কামারখালী হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ওই এলাকার সাথে দেশের অন্যান্য স্থানের রেল সংযোগের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যাবস্থা আমুল বদলে যাবে। দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার রেল সংযোগ স্থাপনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক(পিডি) অতি: প্রধান প্রকৌশলী (ট্র্যাক, পশ্চিম) আছাদুল হক প্রকৌশল নিউজকে বলেন, নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে আমাদের প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। আমাদের কাজের অগ্রগতি ভালো, ইতিমধ্যে আমরা জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করেছি।
এছাড়া নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে ‘আমরা টেন্ডার আহ্বান করবো এবং আগামী মাস থেকে আামাদের ফিজিক্যাল কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
কাজ যেভাবে চলমান তাতে আছাদুল হক আশা প্রকাশ করেন, নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে আমাদের প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেলকে আরো আধুনিক ও যাত্রী বান্ধব করতে সরকার নানান উন্নয়ণ কাজ হাতে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ‘মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২০২ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের মে থেকে ২০২২ সালের এপ্রিলের মধ্যে এ রেলপথ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
যোগাযোগ সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এতে ওই অঞ্চলে বাণিজ্য প্রসার ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ উন্নয়ন হবে। রেল লাইন নির্মিত হলে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা ও মাগুরার মধ্যে রেল নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে।
জানা গেছে, প্রায় ৪৬ বছর আগে ফরিদপুর মধুখালী থেকে কামারখালী পর্যন্ত রেলপথ ছিল। কিন্তু এটা এখন আর ব্যবহার হয় না। তবে কামারখালী থেকে মাগুরা পর্যন্ত কোনো রেলপথ নেই। রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করেই এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হচ্ছে। ১৮৬২ সালে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে জগতি পর্যন্ত ৫৩ দশমিক ১১ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণের মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে রেলপথের যাত্রা শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে ১৮৭০ সালে গড়াই সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি তা গোয়ালন্দঘাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের বাঁশ, বেত, পাট বহনের গুরুত্ব বিবেচনা করে ১৯৩২ সালের ১ জানুয়ারি রাজবাড়ীর কালুখালী ঘাট পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন করা হয়।
সেই সময়ে আরও একটি শাখা লাইন মধুখালী থেকে কামারখালী পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়। এ সময় লাইনটি এলাকার অধিবাসীর কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এই শাখা লাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যা পরবর্তীতে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবার এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আবার নতুন করে প্রাণ ফিরে পাবে ঐ এলাকার জনগণ।