কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে ওএমসি'র মনোপলি ব্যবসা!


প্রকৌশল প্রতিবেদক :
কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে ওএমসি'র মনোপলি ব্যবসা!
  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারের সকল ঔষধ সামগ্রী কেনার দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় ঔষাধাগার বা সেন্ট্রাল মেডিকেল ষ্টোর ডিপো (সিএমএসডি)। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকেই করোনা পরীক্ষার কিট নিয়ে সিএমএসডিতে একক মনোপলি ব্যবসা করেছে ওভারসিস মার্কেটিং কোম্পানি ওএমসি নামক একটি প্রতিষ্ঠান। তারা চীনের সেনচুর বায়োটেক নামের একটি কোম্পানির আরটি-পিসিআর কিট এককভাবে দেশের সমস্ত হাসপাতালে সরবরাহ করে আসছে। ৭৫০ টাকার কিট তারা প্রথমে সিএমএসডিতে সরবরাহ করেছে ৪২০০ টাকা দরে। সাবেক পরিচালক ব্রিঃ জেঃ শহিদুল্লাহ অনিয়ম করে সে সকল কিট কিনলেও বিল আটকে দিয়েছে বর্তমান পরিচালক স্বচ্ছ ইমেজের আমলা আবু হেনা মোরশেদ জামান। অনিয়ম করে কেনা টেষ্টিং কিটের ১০৩ কোটি টাকার ওএমসির বিল আটকে দেওয়ার ফলে হাল সময়ের ক্রেজ অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানের স্বচ্ছ ক্রয় প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ওঠে পড়ে লেগেছে ওএমসি সহ ১৩৫ জন ঠিকাদার। যারা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে জিএস বায়োটেক নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে টার্গেটে রুপান্তর করেছে।

সিএমএসডি সুত্রে জানা যায়, জিএস বায়োটেক সর্বশেষ অর্ডারের চেয়ে ১৫০ টাকা কমে ১ লক্ষ কিটের অর্ডার নেয়। জিএস বায়োটেক -এর কার্যাদেশে সরকারের রক্ষা হয় দেড় কোটি টাকা। জিএস বায়োটেকের কার্যাদেশের পূর্বে বর্তমান পরিচালকের আমলেই পাঁচ লক্ষ কিট সরাবরাহ করে ওএমসি, যার কার্যাদেশ মুল্য ছিল যথাক্রমে ১৫৫০, ১৫২০, ১৩৫০, ১০৫০ টাকা। যাতে ওএমসি মনোপলি ব্যবসা করে সরকারের ফান্ড থেকে ২০ কোটি টাকা বেশি নিয়ে গেছে।

সিএমএসডিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান পরিচালক আসার পর থেকেই প্রত্যেকটি দরপত্র স্বচ্ছতার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে, এমনকি প্রত্যেকটি দরপত্রে পুর্বের চেয়ে কম দামে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে সরকারের প্রায় হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

ক্রেন্দ্রীয় ঔষাধাগার, ওএমসির চক্র থেকে বের হয়ে আসতে চাইলেও পারছে না। কারণ সবগুলি আরটি পিসিআর ল্যাবের মেশিন প্রথমেই সরবরাহ করে ফেলেছে ওএমসি।

জিএস বায়োটেক, উম্মুক্ত দরপত্রে অংশগ্রহণ করে যথাযথ নিয়ম মেনে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ১ লক্ষ কিট আনে হংকং থেকে। চায়নার উৎপাদনকারী থেকে আনতে পারেনি কারণ ওএমসি তাদের মনোপলি ব্যবসার সুবিধার্থে বাংলাদেশের অন্য কোন সরবরাহকারির কাছে কীট সরবরাহ করতে বাধা দেয় একের পর এক। এমন হাজারও নজির রয়েছে। 

জিএস বায়োটেক ওমসির চেয়ে কম দামে কিট সরবরাহ করেছে কেন, এই প্রতিহিংসার বশ্ববর্তী হয়ে ভুয়া প্রচারণা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

এই বিষয়ে জানতে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক এটিএম গোলাম কিবরিয়া জানান, জিএস বায়োটেক দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সকল প্রকার নিয়ম মেনেই ঔষধ প্রশাসনের ছাড়পত্র পেয়েছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে ছাড়পত্র ইস্যু করতো না, এমনকি ছাড়পত্র না পেলে জিএস বায়োটেক কিট আমদানি করতে পারতো না।

অভিযোগ এর বিষয়ে জানার জন্য ওএমসির পরিচালক মো. মারুফ হাসানকে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন তুলেন নি। 

সিএমএসডির পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, স্বচ্ছ প্রক্রিয়াতে সরকারের টাকা সংরক্ষণ করতে গিয়ে অস্বচ্ছ প্রচারণার স্বীকার হলে তা সত্যিই দুঃখজনক। এ বিষয়ে জানতে জিএস বায়োটেক এর মালিকের নাম্বারে কল দেওয়া হলে তিনি ফোন তুলেন নি।