সিএনজি ও অটোরিকশা চুরি : মূলহোতার দশতলা বাড়ি


প্রকৌশল প্রতিবেদক :
সিএনজি ও অটোরিকশা চুরি : মূলহোতার দশতলা বাড়ি
  • Font increase
  • Font Decrease

সিএনজি চালিত অটোরিকশা চুরি করতে একাধিক দল পোষেন সমাজে ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত এক ব্যক্তি। বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে একের পর এক অটোরিকশা চুরি করে তার চোররা।

তারপর সেগুলো ঠিকঠাক করে মেয়াদোত্তীর্ণ অটোরিকশার নম্বর প্লেট জুড়ে দেয়া হচ্ছে। তৈরি করা হচ্ছে ঢাকার সড়কে চলাচলের অনুমতিও। এরপর একটি অটোরিকশা বেচে দিচ্ছে তিন-চার লাখ টাকায়। চার সঙ্গীসহ গোয়েন্দা জালে ধরা পড়ার পর ভাল মানুষের আবরণ খসে পড়েছে চক্রের হোতার।

আমদানি খরচ, নিবন্ধন, সড়কে চলাচলের অনুমতিসহ সব প্রক্রিয়া শেষে রাজধানীর সড়কে একটি সিএনজি নামাতে প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ পড়ে মালিকের। অথচ একই অটোরিকশা মাত্র তিন থেকে চার লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কীভাবে? অটোরিকশা চুরির মামলার তদন্তে নেমে এই রহস্যের মীমাংসা করেছেন গোয়েন্দারা।

গোয়েন্দারা সূত্র জানায়, অটোরিকশা চুরি করতে একাধিক চোর দল গড়ে তুলেছেন মোহাম্মদ কাশেম। তার হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তিন চাকার বাহনটি চুরি করে ঢাকায় নিয়ে আসে চোররা।

সূত্র জানায়, চোরেরা তারপর আব্দুল্লাহপুর ও যাত্রাবাড়িতে মেরামতখানায় ঠিকঠাক করে, মেয়াদোত্তীর্ণ অটোর নম্বরপ্লেট জুড়ে দিয়ে, রুট পারমিট তৈরি করে অটোরিকশাগুলো নেয়া হয় কাশেমের ঠিক করা বহুতল ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে। এরপর ক্রেতা যোগাড় করে তিন থেকে চার লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয় একেকটি অটোরিকশা। এরকম নয়টি বাহন উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

চক্রের সদস্য শেখ সাদী জানায়, 'যাত্রাবাডীর সার্জেন্ট সুকুমার রায় এগুলো দিয়েছে। তিনি বলেছেন এগুলো চালাতে থাকো পরে দেখবো।'

চার সঙ্গীসহ ধরা পড়েছেন এই চক্রের হোতা কাশেম।  সমাজে ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিতি তিনি। দৃশ্যমান কোন আয়ের উৎস না থাকলেও দশতলা বাড়ি করেছেন ঢাকায়। পুলিশ বলছে, দীর্ঘদিন ধরে অটোরিকশা চুরির পর বিক্রির মাধ্যমে গড়েছেন বিপুল সম্পদ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (রমনা) উপ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক বলেন, 'দুই শ্রেণির মানুষ তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। একটা হচ্ছে জেনে যে, সে চোরাই গাড়ী রাখে। আর কিছু মানুষ আছে যারা অল্পদামে সেকেন্ডহ্যান্ড গাড়ি কিনতে চায় তারাও তার কাছে থেকে কিনে।

তিনি বলেন, সমাজে এতদিন ভালো মানুষ হিসেবে ছিল এখন তার কাছ থেকে আমরা এই তথ্যগুলো উদ্ধার করতে পেরেছি।'

এই চক্রটি কীভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ অটোর নম্বরপ্লেট যোগাড় করতো, বিআরটিএ'র কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এর সঙ্গে জড়িত কি-না, তা খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা পুলিশ।

চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তাদের সহযোগিতাকারীদেরও আইনের আওতায় আনার চেষ্টার চলছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস