সাকিব এগ্রো ফার্মের সাইনবোর্ড উধাও
সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। জাতীয় দলের খেলা রেখে আইপিএলে অংশ নিয়েও দ্যূতি ছড়াতে পারেননি। ফ্রাঞ্চাইজিটির বাকি অংশেও যোগ দিতে পারবেন কিনা সেটি নিশ্চিত নয়। এদিকে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) না গিয়ে ঘরোয়া লিগে মোহামেডানের হয়ে খেলছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সেখানেও ব্যর্থতা, স্টাম্পে লাথি মেরে বিতর্কের জন্ম দেন তিনি। সে জন্য তিন ম্যাচ নিষিদ্ধসহ জরিমানা গুনেছেন পাঁচ লাখ টাকা। হারিয়েছেন মোহামেডানের নেতৃত্ব। অবশেষে ডিপিএলের মাঝপথেই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি।
এতো গেল সাকিবের মাঠের মন্দাবস্থা। একই অবস্থা বিরাজ করছে তার ব্যবসার ক্ষেত্রেও। অর্থলগ্নী করা অনেক প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সাকিব সেসব প্রতিষ্ঠানের খোঁজও নিচ্ছেন না, এর জন্য অবশ্য করোনা অনেকাংশে দায়ী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সাকিবের অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের কার্যক্রম এখন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। প্রায় দুই বছর ধরে এখান থেকে কোনো পণ্য রফতানি করা হয়নি। খামারটির সাইনবোর্ডও উধাও হয়ে গেছে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মণ্ডল সম্প্রতি গণমাধ্যমকে বলেন, স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে খামারটি গড়ে তোলা হয়েছিল। কিন্তু কৃষকদের প্রতিশ্রুত জমির ভাড়া পরিশোধ করা হয়নি। পাশাপাশি খামারটিতে কর্মরত শ্রমিকদের বেতনভাতা বকেয়া পড়ায় গত বছর শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছিলেন। বেতন বকেয়া আদায়ের দাবিতে খামারের শ্রমিকরা আন্দোলন করলে গণমাধ্যমে এ নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
ফার্মের জেনারেল ম্যানেজার মো. সালাউদ্দিন বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছিলেন, বকেয়াসহ ১৯ লাখ ৫৪ হাজার টাকা বেতন ১৫০ জন শ্রমিক পাওনা ছিলেন, যা সাকিব পরিশোধ করেননি নির্দিষ্ট সময়ে।
সাকিবের খামারের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন সাকিব। শ্রমিকদের পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রতিশ্রুতির পর ২০২০ সালের ২২ এপ্রিলে শ্রমিকদের সব পাওনা মিটিয়ে দেন সাকিব। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত সাকিব অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে খামারটির সাইনবোর্ডও নেই। গত বছর করোনাকালীন খবরের শিরোনামে এসেছিল সাকিবের এ খামার। সাকিবের এই কাঁকড়া খামারের উদ্যোগ নিয়ে গণমাধ্যমগুলোতে ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল।
সেসব প্রতিবেদনে লেখা হয়েছিল, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনীর পোড়াকটলা দাতনেখালী এলাকায় ৫০ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে সাকিবের কাঁকড়া খামারটি। শুধু এই কাঁকড়ার খামার নয়, পাশাপাশি সাতক্ষীরায় ৩০ বিঘা জমির ওপর একটি চিংড়ি ঘের গড়ে তুলছেন সাকিব আল হাসান।
সেই সময় সাকিব অ্যাগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী ইমদাদুল হক ও স্থানীয়রা জানিয়েছিলেন, সাকিব আল হাসানের ‘সাকিব অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড’ প্রজেক্টটি ওই এলাকার ১৫০ জন মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।
কিন্তু চার বছর পর সেই সাকিবের প্রকল্প কার্যত বন্ধই রয়েছে। এসব বিষয়ে গণমাধ্যমের কোনো প্রশ্নের জবাব দিতে এ মুহূর্তে রাজি নন সাকিব।
প্রকৌশল নিউজ/সু