পুরুষ নির্যাতন হেল্পলাইন, বছরে ২ হাজার অভিযোগ!
একেই বলে উল্টো কাণ্ড। বিশ্বজুড়ে যেখানে মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বাড়ছে, করোনাকালে গার্হস্থ হিংসা আরো বেড়েছে বলে রিপোর্ট আসছে, সেখানে জার্মানিতে পুরুষদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সংক্রান্ত হেল্পলাইনে অভিযোগের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। গত এক বছরে সেখানে এক হাজার ৮ শ'র অধিক ফোন গেছে। এই অবস্থা দেখে কর্তৃপক্ষ হেল্পলাইন খোলা থাকার সময়ও বাড়িয়ে দিয়েছেন।
জার্মানির দুইটি রাজ্য নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া ও বাভারিয়ায় এই হেল্পলাইন খোলা হয়েছিল। এখন বাডেন-ভুর্টেমব্যার্গ রাজ্যও এ হেল্পলাইনের আওতায় আসছে। এই রাজ্যের সামাজিক ন্যায় মন্ত্রী বলেছেন, ‘যে কোনো ধরনের সহিংসতাই জনসমক্ষে আনা উচিত।’ তার মতে, ‘পুরুষের বিরুদ্ধে সহিংসতা এখনো ট্যাবু হয়েই থেকে গেছে। এটা পুরুষদের কাছে লজ্জার বিষয় বলেই মনে করা হয়।’
কর্মকর্তাদের দাবি, এই হেল্পলাইন সামাজিক সাহায্য ব্যবস্থায় যে ঘাটতি ছিল তা পূরণ করছে। নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়ার সমানাধিকার মন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘এর ফলে পুরুষরা তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা হলে তা স্বীকার করে নিচ্ছেন। তারা ভয় ও লজ্জাকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারছেন। তার মতে, ‘মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতার মতো পুরুষদের বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলা হোক।’
কারা হেল্পলাইন ব্যবহার করছেন?
চালু হওয়ার পর এক হাজার ৮২৫টি কল এসেছে। প্রতিদিন ছয় থেকে নয়টি কল আসে। ৩৫ শতাংশ কল আসে নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া থেকে। এটাই জার্মানির সব চেয়ে জনবহুল রাজ্য। বাভারিয়া থেকে ১৮ শতাংশ কল আসে। বাকি কল জার্মানির অন্য রাজ্য থেকে এসেছে।
সমীক্ষা বলছে, অন্ততপক্ষে চারভাগের মধ্যে তিনভাগ কলই ৫১ বছরের নীচের পুরুষরা করেছেন। ৫৩ শতাংশ পুরুষ শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। ৮৫ শতাংশ পুরুষ মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। ৭০ শতাংশ পুরুষ বলেছেন, তারা খুবই সহিংস পরিস্থিতিতে আছেন। তিনভাগের মধ্যে দুই ভাগ অভিযোগকারী নিজেই ফোন করেছেন। দশভাগের একভাগ ক্ষেত্রে আশপাশের মানুষ বা পরিচিতরা ফোন করেছেন। বাকি ফোন এসেছে পেশাদার পরামর্শদাতাদের কাছ থেকে। অধিকাংশ অভিযোগই তাদের বর্তমান বা সাবেক জীবনসঙ্গীদের বিরুদ্ধে।
কীভাবে পরিষেবা বাড়ছে?
হেল্পলাইনের উদ্যোক্তারা সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, তারা এই পরিষেবা বাড়াচ্ছেন। আরো পেশাদারদের নেওয়া হচ্ছে। কাজের সময় বাড়ানো হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে হেল্পলাইন চালু হয়ে যাচ্ছে। এখন অনলাইন পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
প্রকৌশল নিউজ/এমএস