লকডাউনের ১১তম দিন : সড়কে রিকশার রাজত্ব


প্রকৌশল প্রতিবেদক :
লকডাউনের ১১তম দিন : সড়কে রিকশার রাজত্ব
  • Font increase
  • Font Decrease

রফিক মিয়া। রাজধানীতে রিকশা চালান। সকাল থেকে ব্যস্ত সময় তার। সকাল ৮টায় রিকশা নিয়ে বের হয়ে সন্ধা পর্যন্ত চলে। সকালে ৯টার দিকে একটা যাত্রী নিয়ে মোহম্মদপুর থেকে মতিঝিলে এসছেন। অপেক্ষা করছেন পল্টনে। যদি কোন দূরের যাত্রী পাওয়া যায়। তবে, ভাড়া পেতে অপেক্ষা করতে হয়। 

শাহানূর মিয়া। গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে। পরিবার নিয়ে থাকেন গ্রামের বাড়িতে। রোজ রিকশার প্যাডেল ঘুরিয়ে যে টাকা আয় হয় তা দিয়েই চলে সংসারের চাকা। লকডাউনের প্রথমদিকে আয় ভাল না হওয়ায় খুব কষ্টে ছিলেন পরিবার নিয়ে। যাত্রী না পাওয়ায় আয় কমে এসেছে চারের এক ভাগে। তবে, দুইতিন দিন যাবৎ বেশ ভালো আয় হওয়ায় খুশি। 

রবিবার রাজধানীর পল্টন ও ধানমণ্ডিতে কথা হয় তাদের সঙ্গে। তারা বলেন, আজ সপ্তাহের প্রথম অফিস তাই সকাল সকাল বের হয়েছি যাতে বড় ‘ট্রিপ’ ধরতে পারি। দুইজনই বড় একটা বড় ট্রিপ পেয়ে খুশি। এখন পর্যন্ত মোটামুটি ভাল আয়। এখন ছোট ছোট ট্রিপ দিচ্ছি। যাত্রীরা যা ভাড়া দিতে চায় সেই ভাড়াতেই যাচ্ছি। বেঁচে থাকতে হবে, সংসার  চালাইতে হবে। 

রফিক মিয়া বলেন, আগে যেখানে হাজার টাকা আয় হতো সেখানে এখন আয়হয় ৪শ ৫শ টাকা। রিকশার জমা ১২০ টাকা ও ভাতের খরচ দেওয়ার পর আর তেমন কিছু না থাকলেও খেয়ে পরে বেঁচে আছি এই শুকরিয়া। 

সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন মোড় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। প্রায় প্রতিটি সড়কের মোড়ে রিকশা নিয়ে ২০-৩০ জন চালককে রিকশা নিয়ে যাত্রীর অপেক্ষায় বসে থাকতে দেখা গেছে। রিক্সা চালকরা জানান, রাস্তা ফাঁকা থাকার কারণে যেকোন যায়গায় অতি সহজে যাওয়া যায়। ভাড়া শেষ হয়ে যাবার পর অলস সময় বসে কাটাতে হয়। তাদের মধ্যে কেউ যাত্রী পাচ্ছেন তো, অন্যরা পাচ্ছেন না। এক জন যাত্রী দেখলে তিন-চার জন চালকই এক সঙ্গে ডাকাডাকি করেন। এ সুযোগে যাত্রীরাও অপেক্ষাকৃত কম ভাড়ায় রিকশায় উঠতে পারছেন।

কডাউনের ১১তম দিনে অন্যান্য দিনের তুলনায় রাজধানীর সড়কগুলোতে যানবাহন ও মানুষের উপস্থিতি বেশি।সড়কগুলোতে ভিন্ন জায়গায় যনবহনের চাপে সিগনালে আটকে থাকতে হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা আগের মতো থাকলেও কোন কোন জায়গায় ঢিলেঢালা। শ্যামলী থেকে পল্টন পর্যন্ত এলাকার সড়কগুলো ঘুরে দেখা যায়, কয়েকটি জায়গায় চেক পোস্ট বসিয়ে চলছে পুলিশের তল্লাশী।

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় লকডাউনের মধ্যেও সকাল থেকেই রাস্তাঘাটে কর্মমুখী মানুষের ভিড়।