চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেলেন ডিএমপি কমিশনার শফিকুল


প্রকৌশল প্রতিবাদক :
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেলেন ডিএমপি কমিশনার শফিকুল
  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামকে মেয়াদ শেষে অবসরে না পাঠিয়ে আরও এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এ নিয়োগের অন্যান্য শর্ত অনুমোদিত চুক্তিপত্রের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।’

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখা থেকে জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে এ নিয়োগ দেওয়া হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারের চাকরি আইন ২০১৮ এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের কর্মকর্তা মোহা. শফিকুল ইসলামকে তার অবসরোত্তর ছুটি ও সংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থগিত করে ৩০ অক্টোবর বা যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী এক বছরের জন্য ডিএমপি কমিশনার হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।

২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ডিএমপি’র ৩৪তম কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেন পুলিশের অষ্টম ব্যাচের সদস্য মোহা. শফিকুল ইসলাম। এর আগে তিনি সিআইডি প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনার কারণে তার চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর গুঞ্জন ওঠে। আগামী ২৯ অক্টোবর শফিকুল ইসলামের বয়স ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় পরদিন থেকে অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ার কথা ছিল। এর আগেই চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হলো তার।

শফিকুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা থানার নওদাবন্ড বিল দোয়ারপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মো. শওকত আলী ও মায়ের নাম বেগম সুফিয়া খাতুন।

শফিকুল ইসলাম ৮ম বিসিএসের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি এএসপি হিসেবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, খাগড়াছড়ি জেলা ও মৌলভীবাজার জেলায় সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

পদোন্নতিক্রমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে খাগড়াছড়ি জেলা ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। এরপর তিনি পুলিশ সুপার হিসেবে ৭ এপিবিএন-পটুয়াখালী জেলা, ২ এপিবিএন-সুনামগঞ্জ জেলা, কুমিল্লা জেলায় দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এবং পুলিশ কমিশনার হিসেবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে ডিআইজি, চট্টগ্রাম রেঞ্জ এবং ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি পদন্নোতি প্রাপ্ত হয়ে অ্যাডিশনাল আইজিপি হিসেবে এন্টি টেররিজম ইউনিট, ঢাকায় যোগদান করেন। ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর অ্যাডিশনাল আইজিপি হিসেবে পুলিশ হেডকোয়ার্টাসে এবং ২০১৯ সালের ১৬ মে অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) প্রধান হিসেবে যোগ দেন।

কর্মক্ষেত্রে অনন্য পেশাদারত্ব, সততা ও সুনিপুণ দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পরপর দুইবার বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পুরস্কার বিপিএম পদক লাভ করেন। ২০১৪ সালে ডিআইজি, চট্টগ্রাম রেঞ্জ এবং ২০১৭ সালে ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জে দায়িত্ব পালনকালে তিনি এ পদক লাভ করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান কমিশনারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে থেকেই নতুন কমিশনার হওয়ার জন্য একাধিক কর্মকর্তা তদবির করছিলেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কাকে রেখে কাকে কমিশনার পদে পদায়িত করবেন, তা নিয়ে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।

তুলনামূলক ঊর্ধ্বতন ব্যাচের কর্মকর্তাদের রেখে নিচের ব্যাচের কোনো কর্মকর্তাকে কমিশনার পদে পদায়িত করা হলে বাহিনীতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও আলোচনা চলছে। এ কারণে বর্তমান কমিশনার শফিকুল ইসলামকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া অথবা ১২তম ব্যাচের কাউকে এ পদে পদায়িত করা হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত শফিকুল ইসলামকে কমিশনার পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিলো সরকার।