একনেকে ৫ হাজার ৮২৫.৭৪ কোটি টাকার ১১টি প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনীতি পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আজ ৫ হাজার ৮২৫ দশমিক ৭৪ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন। প্রকল্পগুলোর মধ্যে ১ হাজার ১১৪ দশমিক ৬৩ কোটি টাকার ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেইনিং ইনকিউবেশন সেন্টার (১৪)’ রয়েছে। একনেকের চেয়ারপার্সন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এবং মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীগণ, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট সচিবগণ রাজধানীর শের-এ-বাংলা নগর এলাকার এনইসি সম্মেলন কক্ষ থেকে সভায় যোগ দেন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আজ আনুমানিক মোট ৫ হাজার ৮২৫ দশমিক ৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, অনুমোদিত ১১টি প্রকল্পের মধ্যে ৮টি নতুন। অপর তিনটি সংশোধিত। তিনি আরো বলেন, ‘মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৩ হাজার ৯৬৩ দশমিক ৩৮ কোটি টাকা সরকার দেবে এবং ১ হাজার ২২০ দশমিক ৪৬ কোটি টাকা সংগঠনগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে ও ৬৪১ দশমিক ৯০ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা থেকে আসবে।’
মান্নান জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ২০২৬ সালের ডিসেম্বর মাস নাগাদ ১ হাজার ১১৪ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪টি আইটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করবে।
তিনি আরো বলেন, সাত বিভাগের ১৪টি জেলায় এই ১৪টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। বিভাগগুলো হচ্ছে- ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ।
মান্নান আরো বলেন, আইটি অথবা হাই-টেক সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলোর ব্যবসা কর্মকা- পরিচালনার জন্য অবকাঠামোগত সুবিধা সৃষ্টি করা, আইটি শিল্পের সাথে একাডেমিক সংযোগ স্থাপন ও দেশের প্রতিটি অঞ্চলের বিজনেস প্রসেস আউট সোর্সিং (বিপিও) খাতের তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি প্লাটফরম তৈরি করাই ১৪টি জেলায় এই আইটি প্রশিক্ষণ ও ইনকিউবেশন কেন্দ্রগুলো স্থাপনের লক্ষ্য।
মান্নান বলেন, ইনকিউবেশন সেন্টারে অন্তত এসএসসি অথবা সমমানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়ে তোলা হবে। এখানে তাদের আইটি ও আইটিইএ এ দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করা হবে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে স্টার্ট-আপ সহায়তার মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হতে তাদের সহায়তা করা হবে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে শক্তি, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৩টি প্রকল্প, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় দুটি, সড়ক, পরিবহন ও যোগাযোগ বিভাগের আওতায় দুটি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় একটি, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের আওতায় একটি, নৌমন্ত্রণালয়ের আওতায় একটি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় একটি প্রকল্প রয়েছে।
শক্তি, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় দুটি প্রকল্প হচ্ছে- ৬৭৯ দশমিক৭২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যমান ৩৩/১১ কেভি উডেন পোল মাউন্টেড সাবস্টেশনস ইন বিআরইবি (পর্যায়-১)। ২৪১ দশমিক ০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ‘ইমপ্লিমেন্টেশন অব স্মার্ট ডিস্ট্রিবিশন সিস্টেম ইন নেসকো এরিয়া’ প্রকল্প এবং ৫৫৬ দশমিক ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ইন্সটলেশন অবসোল্যুট পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন (থার্ড রিভিশন) প্রকল্প।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় দুটি প্রকল্প হচ্ছে- ১৩৭ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর স্থানীয় সরকারের উদ্যোগ প্রকল্প ও ১৯৮ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘যশোরে শেখ জহিরুল হক পল্লী উন্নয়ন একাডেমি স্থাপন’ প্রকল্প।
সড়ক, পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় দুটি প্রকল্প হচ্ছে- ৪৬৩ দশমিক ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে দিনাজপুর জেলা সড়ক বিভাগের আওতায় ‘হিলি (স্থল বন্দর)-ডুগডুগি-ঘোরঘাট জাতীয় মহাসড়কের যথযথ উন্নয়ন’ ও মার্কেট এলাকায় চত্ত্বর ও নর্দমা নির্মাণ ও তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ভগ্নপ্রায় অথবা সরু কালভার্ট পুনঃনির্মাণ প্রকল্প এবং ১ হাজার ৮৪২ দশমিক ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শেরপুর (কানাসাখোলা)-ভীমগঞ্জ-নারায়ণখোলা-পরাণগঞ্জ-ময়মনসিংহ (রহমতপুর) সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প।
সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে-৩৪২ দশমিক ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘মিঠামাইন উপজিলা অংশের গোড়াউত্রা, ইটনা উপজিলা অংশের বলাই-শ্রীনগর নদী, ধানু নদী ও নামাকুরান নদী এবং অষ্টগ্রাম উপজেলা অংশের ধলেশ্বরী নদীর উন্নয়ন ও পুনর্বাসন এবং ৬৪ দশমিক ৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অস্ত্রাগার নির্মাণ (প্রথম পর্যায় ৪০) এবং ২ হাজার ৫২০ দশমিক ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০০টি উপজিলায় কারিগরি স্কুল স্থাপন। সুত্র-বাসস।