সোমবার থেকে রাত ৮টার পর দোকানপাট বন্ধ
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সোমবার থেকে রাত ৮টার পর সারাদেশে দোকান, বিপণিবিতান, মার্কেট ও মুদি দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে পচনশীল পণ্য, ওষুধ, খাবারের দোকানসহ অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেচাকেনা হয়-এমন দোকানের ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত শিথিলযোগ্য। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।
রোববার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী 'বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬' এর ১৪৪ ধারার বিধান কঠোরভাবে প্রতিপালনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ইস্যুতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরের কথা জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমিন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন, এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, ঢাকা চেম্বারসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী মালিক সংগঠন এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে শ্রম প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১১৪ ধারার বিধান মতে, রাত ৮টার পর সারাদেশের দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার বন্ধের যে নির্দেশ দিয়েছে সরকার তা সোমবার থেকে কার্যকর করা হবে। ইতোমধ্যে এ নির্দেশনা দেশের সব উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার।
রাত ৮টার পর দোকান বন্ধ রাখা ছাড়াও প্রত্যেক দোকান বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠানকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত দেড় দিন বন্ধ রাখতে হবে বলে জানিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়।
রাত ৮টার পর খোলা থাকবে যেসব প্রতিষ্ঠান
>>ডক, জেটি, স্টেশন, বিমানবন্দর এবং পরিবহন সার্ভিস টার্মিনাল অফিস।
>>তরিতরকারি, মাছ, মাংস, দুগ্ধজাতীয় সামগ্রী, রুটি, পেস্ট্রি, মিষ্টি এবং ফুল বিক্রির দোকান।
>>ওষুধ, অপারেশন সরঞ্জাম, ব্যান্ডেজ অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান।
>>দাফন ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান।
>>তামাক, সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান এবং দোকানে বসে খাওয়ার (হালকা) নাশতা বিক্রির খুচরা দোকান।
>>খুচরা, পেট্রল বিক্রির জন্য পেট্রলপাম্প এবং মেরামত কারখানা নয় এমন মোটরগাড়ির সার্ভিস স্টেশন।
>>নরসুন্দর এবং কেশ প্রসাধনীর দোকান।
>>যেকোনো ময়লা নিষ্কাশনকারী প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
>>যেকোনো শিল্প, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান যা জনগণকে শক্তি আলো অথবা পানি সরবরাহ করে এমন প্রতিষ্ঠান।
>> ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবার দোকান, সিনেমা অথবা থিয়েটার।
তবে শর্ত থাকে যে, একই দোকানে অথবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যদি একাধিক ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত হয় এবং অধিকাংশ তাদের প্রকৃতির কারণে এই ধারার অধীন অব্যাহতি পাওয়ার যোগ্য হয়, তাহলে সমগ্র দোকান বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটির ক্ষেত্রে উক্তরূপ অব্যাহতি প্রযোজ্য হবে।