সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন


ডেস্ক নিউজ
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন
  • Font increase
  • Font Decrease

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে দৃষ্টি নন্দন এবং সবুজের সমারোহে ভরে তুলতে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মুক্তযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মল হক। বুধবার (২২ জুন) বিকেলে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল স্থান দখল করে আছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখানেই ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ প্রদান করেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন। বন্দিদশা হতে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি স্বদেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু এখানেই আবেগঘণ ভাষণ দেন। ১৯৭২ সালে বিরাট জনসভায় এখানেই বক্তব্য দিয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বিভিন্ন সময়ের আন্দোলন ও ঘটনাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিকট তুলে ধরার উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইতোমধ্যে শিখা চিরন্তন, স্বাধীনতা স্তম্ভ ও ভুগর্ভস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রভৃতি নির্মাণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ‘ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ’ (৩য় পর্যায়)’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। এ উদ্যানকে দৃষ্টি নন্দন এবং সবুজের সমারোহে ভরে তুলতে ছোট-বড় প্রায় ৫ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরোপণ করা হবে।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রঞ্জিত কুমার দাস,  স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি মীর মনজুরুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুনর রশিদ খান, ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায় ) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হাবিবুল ইসলামসহ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জন্য প্রণীত স্থাপত্য নক্সার আলোকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় চলমান কার্যক্রম অবহিতকরণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে সবুজায়নের বিষয়ে উদ্ভিদবিদ, পরিবেশবিদ, স্থপতি, প্রকৌশলী ও সুশীল সমাজের মূল্যবান মতামত/পরামর্শ গ্রহণের লক্ষ্যে ঢাকার সেগুনবাগিচার গণপূর্ত ভবনের সম্মেলন কক্ষে গত বছরের ২৪ জুন একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় প্রাপ্ত মতামত ও পরামর্শের আলোকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কী কী গাছ লাগানো যায় তা সুপারিশের জন্য গত ১৮ আগস্ট  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুনর রশিদ খানকে সভাপতি করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তার দাখিল করা প্রতিবেদনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পুরো এলাকায় গাছ লাগানোর সুষ্ঠু বিন্যাসের সুবিধার্থে উদ্যানের প্রকল্পনাধীন এলাকার মাস্টারপ্ল্যানকে ০৭টি জোনে (A,B,C,D,E,F,G) ভাগ করে বিদ্যমান গাছের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জোনসমূহের ভিন্ন ভিন্ন অংশে ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ। যেমন - শোভাবর্ধনকারী, সুগন্ধী ফুল, বিরুৎ, স্বল্প/উচ্চ গুল্ম, বৃক্ষজাতীয়, ভেষজ, ফল, হেজজাতীয়, কাঠজাতীয়, বিলুপ্ত/বিপন্ন ইত্যাদি রোপণের সুপারিশ করে। ওই কমিটির দাখিল করা প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে “ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়)”-শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।