৪ দফা দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমাবেশ
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ন্যূনতম বেতন, পদবি নির্ধারণ ও বিল্ডিং কোড সংশোধনসহ প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও পলিটেকনিক ছাত্র-শিক্ষকদের পেশাগত সমস্যা সমাধানসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে 'ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র-শিক্ষক পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদ'।
রোববার সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব দাবি জানান তারা। তাদের দাবিগুলো হলো, বিএনবিসি-২০২০ এ সংযোজিত ধারা-উপধারাসমূহ সংশোধন করা; ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বিশেষ ইনক্রিমেন্ট প্রদান, পদোন্নতির কোটা ৫০ শতাংশে উন্নীতকরণসহ পেশাগত সমস্যা এবং বেকারদের কর্মসংস্থান ও প্রাইভেট সেক্টরে কর্মরত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সমস্যা সমাধান করা; পলিটেকনিক, টিএসসি, এসএসসি (ভোক) ও টিটিসির সমস্যা সমাধান, পদোন্নতি, স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (স্টেপ) শিক্ষকদের নিয়মিতকরণ এবং শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ভাতা বৃদ্ধি করা এবং চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা কোর্সকে তিন বছরে রূপান্তর না করা।
সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. ফজলুর রহমান খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারস বাংলাদেশের (আইডিইবি) সভাপতি এ কে এম এ হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি মো. খবির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আব্দুল মোতালেব, ঢাকা পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, সংগ্রাম পরিষদের ঢাকা জেলা শাখার সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন হাওলাদার, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কারিগরি শাখার সভাপতি সুমন হায়দার, ছাত্রনেতা মেহেদী হাসান ও সাইফুল আলম মোল্লা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব মির্জা এটিএম গোলাম মোস্তফা এবং সমাবেশের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল কুদ্দুস।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ৪ থেকে ৫টি স্মারকপত্রের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে অব্যাহতভাবে নির্দেশনার পরও দীর্ঘ ১০ বছরেও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করে বরং কারিগরি আমলাদের প্ররোচনায় একের পর এক ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার বিদ্বেষী কালাকানুন প্রণয়ন করা হচ্ছে। যার সর্বশেষ সংযোজন নির্মাণ কাজে জনগণকে জিম্মি করে ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের অধিকারহরণে ২/৩টি জনস্বার্থবিরোধী ধারা সম্বলিত বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোর্ড (বিএনবিসি)'র গেজেট প্রকাশ। ’
তারা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা ও আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশ থাকার পরেও কিভাবে বিএনবিসিতে জনস্বার্থ বিরোধী ধারা উপধারা সংযোজন হলো?’ দেশের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাব্যবস্থা ধাংসের যে পাঁয়তারা চলছে উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘কার স্বার্থে প্রচলিত ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সকে ৩ বছরে রূপান্তরের ন্যাক্কারজনক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তারা আরও বলেন, ‘সরকারের মাঝে ঘাপটি মেরে থাকা প্রতিক্রিয়াশীল চক্র নানান কৌশলে ৫ লাখ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও ৪ লাখ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে আন্দোলনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর ফলে কোনো ধরনের সংকট সৃষ্টি হলে তার জন্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের দায়ী করা যাবে না।’ তারা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাব্যবস্থা রক্ষায় ও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রকৌশলীদের সমস্যা সমাধানে অবিলম্বে সংগ্রাম পরিষদের ৪ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষে দুপুরে সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মো. ফজলুর রহমান খান ও সদস্য সচিব মির্জা এটিএম গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবেন। সমাবেশে সারাদেশ থেকে কয়েক হাজার ডিপ্লোমা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হন।