হত্যাকাণ্ড–সহিংসতার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন


ডেস্ক নিউজ
হত্যাকাণ্ড–সহিংসতার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন
  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সব হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক–প্রধান জোসেপ বোরেল। এছাড়া ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ দেওয়া ও আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এক বিবৃতিতে জোসেপ বোরেল এ উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।

ইইউর পররাষ্ট্র বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৭ জুলাই লাওসে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানের আঞ্চলিক ফোরামের মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন জোসেপ বোরেল। ওই বৈঠকের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের কাছে সাম্প্রতিক হত্যা-সহিংসতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

বোরেল বলেন, আমি বাংলাদেশের প্রতিনিধি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের কাছে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে কর্তৃপক্ষের ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ ও আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটন’ নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছি।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, সহিংসতা, নির্যাতন, গণগ্রেফতার ও সম্পদের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়েও আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অবশ্যই এসব কর্মকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

এছাড়া, বাংলাদেশে বিক্ষোভকারী, সাংবাদিক, শিশুসহ অন্য ব্যক্তিদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের বহু ঘটনা ঘটেছে’, যেগুলোর পূর্ণ জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে বলেও উল্লেখ করেছেন ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে হাজারও মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা যেন যথাযথ আইনি সুবিধা পান, তা নিশ্চিত করতে হবে।

জোসেপ বোরেল বলেন, এই সংকটময় পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নেয়, সেগুলোর ওপর তারা গভীরভাবে নজর রাখবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন-বাংলাদেশ সম্পর্কের মূলনীতিগুলো বিবেচনায় রেখে তারা আশা করছেন, বাংলাদেশে সব ধরনের মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানানো হবে।

এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে ‘দেখামাত্র গুলি’ করার একটি ঘটনাও ঘটেনি। আইন প্রয়োগকারী অভিযানের সময় হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছে সরকার।

গত ২৮ জুলাই এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এতে বলা হয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও সহিংসতার ঘটনায় নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও কিছু আন্তর্জাতিক অংশীদারের উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টি লক্ষ্য করেছে সরকার। বিশেষ করে প্রোপাগান্ডা, অপতথ্য ও গুজব প্রচারের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে অকুণ্ঠ সমর্থন ও পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্যক ধারণার জন্য সরকার কৃতজ্ঞ। সরকার সব আন্তর্জাতিক অংশীদারদের আশ্বস্ত করতে চায় যে, সরকার এবং জনগণের সময়োপযোগী এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে।

এতে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ ও সুনির্দিষ্ট আন্দোলনকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করার কোনো সুযোগ নেই। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে হত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে।