বীরোচিত সংবর্ধনা পেল সাফ জয়ী নারী ফুটবল দল, ছাদখোলা বাসে মেয়েদের শোভাযাত্রা


প্রকৌশল প্রতিবেদক:
বীরোচিত সংবর্ধনা পেল সাফ জয়ী নারী ফুটবল দল, ছাদখোলা বাসে মেয়েদের শোভাযাত্রা
  • Font increase
  • Font Decrease

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা নিয়ে দুপুরে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। দেশে ফিরে বীরোচিত সংবর্ধনা পেল সাফ জয়ী নারী ফুটবল দল। বিমান বন্দরে অবতরণের পর গোটা দলকে কেক খাইয়ে ফুলের মালা পরিয়ে তাদের বরণ করেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।

কেক কেটে অধিনায়ক সাবিনা,  কোচ ছোটন,  ওমেন উইং এর চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরনকে এ সময় কেক খাইয়ে দেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। এর পর তাদের পরিয়ে দেয়া হয় ফুলের মালা।  এর আগে কাঠমান্ডুর বিমান বন্দরে পৌঁছানোর পর থেকে মেয়েরা উদগ্রীব হয়েছিল দেশে ফেরার জন্য।

বিমানে উঠার পরেই তাদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়েয়ে পড়ে। বিমানে বারবার ঘোষণা আসতে থাকে,  শিরোপা জয়ের জন্য বাংলাদেশ নারী দলকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। সঙ্গে সঙ্গে মেয়েরা হাততালি দিয়ে উচ্ছ্বাস জানতে থাকে। স্থানীয় সময় দুপুর সোয়া একটায় কাঠমান্ডুর ত্রিভুভন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে বাংলাদেশ বিমানের বিজি ৩৭২ বিমানটি।  চলন্ত বিমানেই তাদের মিস্টিমুখ করায় বিমান কর্তৃপক্ষ। এই সময় বিমানের ক্রুরাও মেয়েদের সংগে ছবি তোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

বাংলাদেশ সময় দুপুর ঠিক ১টা ৫০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্দর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সংগে সংগেই আরেক দফা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে সাফ বিজয়ী নারী ফুটবল দলের সদস্যরা।

বিমানবন্দরে নারী দলকে স্কট দিয়ে নিয়ে আসা হয় ভিআইপি লাউঞ্জে। সেখানেই তাদের বরন করেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন আহমেদসহ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বিমানবন্দরের বাইরে বাংলাদেশের স্বর্ণকন্যাদের বরণ করে নিতে উপস্থিত ছিলেন হাজারো ফুটবলপ্রেমী, যা দেখে উদ্বেলিত হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন ফুটবলাররা, ভেসেছেন আবেগের উচ্ছ্বাসে। তাই তো সাফের শিরোপাটি দেশের সব মানুষকে উৎসর্গ করেছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন।

বিমানবন্দরে অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন করতে পারেনি চ্যাম্পিয়ন দল। তবে বের হওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমে ছোট্ট করে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন সাবিনা। তিনি বলেন, ‘সবাইকে ধন্যবাদ, আমাদের জন্য দোয়া করবেন। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ বলুন বা ১৮ কোটি কিংবা ২০ কোটি, এই ট্রফি বাংলাদেশের সব মানুষের।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমাদের এত সুন্দর করে বরণ করে নেওয়ার জন্য আমরা অনেক কৃতজ্ঞ। মন্ত্রী মহোদয় ও ফেডারেশনের যারা এসেছেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশের মেয়েদের, বাংলাদেশের ফুটবল যে আপনারা এত ভালোবাসেন, এসব দেখে আমরা অনেক অনেক গর্বিত।’

পরে সোনালী মেয়েদের চাহিদা অনুযায়ী ছাদ খোলা বাসে করে বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করে সাফ চ্যম্পিয়নরা। বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে তাদের যাত্রা শেষ হবে মতিঝিলের বাফুফে ভবনে এসে। বিমানবন্দর রাস্তার দুই পাশে দাড়িয়ে পতাকা নেড়ে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে তাদের অভিনন্দন জানায় ফুটবল অনুরাগীরা।

কেউবা ব্যানার নাড়াচাড়ার পাশাপাশি ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিচ্ছেন। অনেকে ছুটছেন গাড়ি লক্ষ্য করে। ফুটওভার ব্রীজগুলো গিজগিজ করছে শতশত মানুষের ভিড়ে। হাত নাড়িয়ে তাদের অভিবাদন গ্রহণ করছে ১৯ বছর পর দেশকে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট দেওয়া মেয়েরা।  

এত ভালোবাসা আর আবেগ যে তাদের অভিভূত করেছে, তা তাদের হাত নাড়ানো আর মুখের হাসিতেই ফুটে উঠছে। কেউ কেউ তো সেলফি তুলতেও ব্যস্ত। এদিকে ফাইনালে জোড়া গোল করা কৃষ্ণা রানি সরকার দেশের মাটিতে পা রেখেই নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘বাংলার বাতাস গায়ে লেগেছে অনেকদিন পর’।