ভূমধ্যসাগরে অভিবাসন প্রত্যাশীদের নৌকাডুবি, বাংলাদেশিসহ নিখোঁজ ৪৩


প্রকৌশল নিউজ ডেস্ক :
ভূমধ্যসাগরে অভিবাসন প্রত্যাশীদের নৌকাডুবি, বাংলাদেশিসহ নিখোঁজ ৪৩
  • Font increase
  • Font Decrease

তিউনিশিয়ার উপকূলের কাছে ভূমধ্যসাগরে বাংলাদেশিসহ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে অন্তত ৪৩ জন নিখোঁজ হয়েছেন। লিবিয়া থেকে যাত্রা শুরু করে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়া ওই নৌকার অন্য আরও ৮৪ আরোহীকে উদ্ধার করেছে তিউনিশিয়ার নৌবাহিনী।

শনিবার ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিউনিশিয়া রেড ক্রিসেন্ট বলেছে, ডুবে যাওয়া ওই নৌকায় বাংলাদেশ, মিসর, সুদান এবং ইরিত্রিয়ার নাগরিকরা ছিলেন। তারা লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টার সময় নৌকাটি ডুবে যায়।

আন্তর্জাতিক এই দাতব্য সংস্থা বলেছে, লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জুওয়ারা উপকূল থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে নৌকাটি যাত্রা শুরু করেছিল। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তিউনিশিয়া উপকূলে অভিবাসন প্রত্যাশীদের বহনকারী বেশ কয়েকটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে।

বর্তমানে ওই অঞ্চলের আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতির সুযোগে তিউনিশিয়া এবং লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পাড়ি জমানোর চেষ্টা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিউনিশিয়া রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তা মঙ্গি স্লিম বলেছেন, লিবিয়ার জুয়ারা থেকে ইউরোপগামী একটি নৌকা ভূমধ্যসাগরে ডুবে গেছে। এই নৌকার ৪৩ যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন এবং অন্য ৮৪ জনকে তিউনিশিয়ার নৌবাহিনী উদ্ধার করেছে।

এর আগে, গত রোববার লিবিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার পথে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী একটি নৌকা ভূমধ্যসাগরে ভেঙে যায়। পরে তিউনিশিয়ার নৌবাহিনী ওই নৌকা থেকে ১৭৮ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করে। এ সময় নৌকাটিতে অন্য দুই অভিবাসনপ্রত্যাশীর মরদেহ পাওয়া যায়। নৌকাটি থেকে উদ্ধার অভিবাসনপ্রত্যাশীরা বাংলাদেশ, মিসর, ইরিত্রিয়া, আইভরিকোস্ট, মালি, নাইজেরিয়া, সিরিয়া এবং তিউনিসিয়ার নাগরিক বলে জানিয়েছিল তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া গত ২৪ জুন ভূমধ্যসাগর থেকে ভাসমান অবস্থায় ২৬৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড। এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে ২৬৪ জনই বাংলাদেশি। লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে অবৈধপথে ইউরোপে যাওয়ার সময় ওইদিন তাদের উদ্ধারের তথ্য জানায় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।

গত দুই বছরে লিবিয়া থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল বৃদ্ধি পেয়েছে। মঙ্গি স্লিম গত মাসের শেষের দিকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, তিউনিশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের হোস্টেলগুলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ রয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমানোর অন্যতম পথ হয়ে উঠেছে ইতালি। তবে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইতালি হয়ে ইউরোপ যাত্রার চেষ্টা প্রায়ই ব্যর্থ হয়। চলতি বছরে ইতালি হয়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইউরোপ যাত্রার পরিমাণ আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৯ হাজার ৮০০ অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতালিতে পৌঁছেছেন; যাদের বেশিরভাগই সংঘাত এবং দারিদ্র থেকে বাঁচতে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ছেড়ে পালিয়েছেন। কিন্তু গত বছরের একই সময়ে ইতালিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পৌঁছানোর এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৬ হাজার ৭০০ বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।