নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে, জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দেবে : প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি যেন কোনো অশুভ পদক্ষেপের মাধ্যমে আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে না পারে সেজন্য দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং জনগণ নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার ভোগ করবে।
তিনি বলেন, “এদেশে যে কোনো মূল্যে নির্বাচন হবে এবং জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের ভোট দেবে।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ অপরাহ্নে সিভিল এভিয়েশন মাঠ কাওলায় মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা আমার এই কথাটা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন যে উন্নয়ন চাইলে নৌকা মার্কা। ধ্বংস চাইলে ঐ বিএনপি-জামায়াত এরা। কাজেই, সেইদিকে লক্ষ্য রেখেই আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি নৌকা মার্কায় ভোট দিন। আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন।
তিনি বলেন, আমার একটাই কথা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছি কাজেই ভোট দিলে আছি না দিলে নাই। কিন্তু, দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাব। আমরা চাই নৌকা মার্কায় ভোট দিন। যাতে আবারো আপনাদের সেবা করতে পারি।
শেখ হাসিনা বলেন, যেভাবে হোক নির্বাচন এদেশে হবেই এবং জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে।
তিনি বলেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সেটা একমাত্র নৌকা মার্কাই পারে। তাই, আপনাদের কাছে আমার এটাই আবেদন থাকবে সামনে নির্বাচন। আমি জানি বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি আসবে না তা নিয়ে তারা দ্বিধাদ্বন্দে ভোগে।’
এটাই স্বাভাবিক আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, তারা যে নির্বাচন করবে তাদের নেতাটা কে? তারা যে নির্বাচন করবে তাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবে? ঐ দুর্নীতিবাজ পলাতক আসামী! না এতিমের অর্থ আত্মসাতকারি!
“এজন্য তাদের চেষ্টা নির্বাচন বানচাল করার। নির্বাচন হলেই তারা জানে নৌকা মার্কা ভোট পাবে এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। দেশের উন্নয়ন আরো ত্বরান্বিত হবে। তাই, তারা নির্বাচনকে নষ্ট করতে চায়। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে চায়। কাজেই এটা যেন করতে না পারে সেজন্য দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আর বিশেষকরে ঢাকাবাসী আপনাদেরকেও আমি সতর্ক করে দিচ্ছি,” যোগ করেন তিনি।
তিনি এ সময় নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য সমবেত জনতার অঙ্গীকার চাইলে সকলে দুই হাত তুলে সমম্বরে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, শুধু নিজে ভোট দিলে হবে না পরিবার, বন্ধু-বন্ধব, দেশে-বিদেশে সকলের কাছে প্রচার করতে হবে। প্রচার করতে হবে যে এইদেশের উন্নয়নের জন্য একমাত্র আওয়ামী লীগই রয়েছে। তারাই একমাত্র এদেশের উন্নয়ন করতে পারে, গণতন্ত্র দিতে পারে।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বক্তৃতা করেন।
আরো বক্তৃতা করেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্পচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ঢাকা সিটি উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসান, আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, ঢাকা ১৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণ সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কোচির পরিচালনায় সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩য় টার্মিনাল উদ্বোধন উপলক্ষে টার্মিনাল উদ্বোধনের দিনে গত ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় এই সমাবেশটি দুর্যোগাপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য পিছিয়ে দিয়ে এদিন অনুষ্ঠিত হয়। প্রখর সূর্যের তাপ উপেক্ষা করে সকাল থেকেই নানা রংয়ের পোশাক পরে স্লোগানে স্লোগানে আকাশ বাতাস মুখরিত করে দলে দলে উৎফুল্ল নেতা-কর্মী এবং সাধারণ জনগণ সমাবেশে যোগ দেন এবং বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র এলাকাটি জনসমুদ্রে রূপ লাভ করে।