আল-জাজিরার সম্প্রচার নিষিদ্ধের দাবি আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের
দেশে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার সম্প্রচার নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এর ঢাকা কেন্দ্র।
দেশে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার সম্প্রচার নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এর ঢাকা কেন্দ্র।
সম্প্রতি আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটির পক্ষে কেন্দ্রটির সম্পাদক প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আল-জাজিরা বহু আগে থেকেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করে চলেছে। জঙ্গিবাদকে উসকে দেওয়ার কাজও তারা সুচারুভাবেই চালিয়ে যাচ্ছে। এবার তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারা ব্যাহত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, আল-জাজিরা কর্তৃক বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র অতীতের মতো ভবিষ্যতেও রুখে দেবেন দেশের সচেতন নাগরিকেরা।
আল-জাজিরা শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই পক্ষপাতমূলক সংবাদ পরিবেশনা করছে না, বরং এ ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুবিদিত। পশ্চিমা বিশ্বে আল-জাজিরাকে দেখা হয় সন্ত্রাসবাদী কর্মকান্ডের পরোক্ষ প্রেরণাদাতা হিসেবে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ পরিবেশনের কারণে মিসর ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সরকার এই সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এই যখন পরিস্থিতি, তখন বাংলাদেশেও জনমত জোরদার হচ্ছে আল-জাজিরার বিরুদ্ধে।
আল-জাজিরা কর্তৃক প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদনটি একগুচ্ছ বিভ্রান্তিকর শ্লেষ আর বক্র ইংগিত ছাড়া আর কিছু নয়, যা আসলে চরমপন্থি গোষ্ঠী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কুখ্যাত কিছু ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ‘অপপ্রচার’, যারা ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ রাষ্ট্রের প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক নীতির বিরোধিতা করে আসছে।
এমনকি এই প্রতিবেদনে ১৯৭১ সালের নৃশংস গণহত্যার কথা উল্লেখও করা হয়নি। জামায়াতের অপরাধীরা সে সময় লাখ লাখ বেসামরিক বাঙালিকে হত্যা করে এবং দুই লাখের বেশি নারীকে ধর্ষণ করে। এটা আল জাজিরা এবং তাদের প্রতিবেদনের প্রধান ভাষ্যকার ডেভিড বার্গম্যানের রাজনৈতিক পক্ষপাতেরই প্রতিফলন, যে বার্গম্যান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মূল সূত্র একজন সন্দেহভাজন আন্তর্জাতিক অপরাধী, যাকে আল জাজিরাই ‘সাইকোপ্যাথ’ আখ্যায়িত করেছে। প্রধানমন্ত্রী বা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওই ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার সামান্যতম প্রমাণও সেখানে নেই। আর মানসিক ভারসাম্যহীন কারও কথার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়া একটি আন্তর্জাতিক নিউজ চ্যানেলের জন্য বড় ধরনের দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক।
“এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে জামায়াতে ইসলামীর মদদপুষ্ট কয়েকজন দন্ডিত পলাতক অপরাধী এবং কুখ্যাত ব্যক্তি তাদের চিরাচরিত ছকে বাংলাদেশবিরোধী এই অপপ্রচার সাজিয়েছে, যারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন উগ্র গোষ্ঠী এবং সংবাদমাধ্যম, বিশেষ করে আল জাজিরার সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন সময়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।”
“কিছু উগ্রপন্থি ও তাদের সহযোগী, যারা লন্ডন এবং বিভিন্ন জায়গায় থেকে এসব করছে, তাদের এই বেপরোয়া ‘অপপ্রচারকে’ বাংলাদেশ সরকার প্রত্যাখ্যান করছে। বাংলাদেশের অসাধারণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য যেখানে সরকারের ভূমিকা প্রমাণিত, সেই অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সরকারকে কক্ষচ্যুৎ করার লক্ষ্য নিয়ে সাজানো হীন রাজনৈতিক ছক বাস্তবায়নে আল জাজিরা নিজেদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে, এটা হতাশাজনক।”
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা-বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর’ আল-জাজিরার প্রামাণ্যচিত্র প্রচারের প্রতিবাদে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি), ঢাকা কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটি ও কাউন্সিলের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হচ্ছে।
কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী জামাত-শিবিরের’ মুখপাত্র ‘বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে আল-জাজিরার সম্প্রচার নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি ।
‘বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ অপরাধে আল-জাজিরার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া এবং জামায়াতে ইসলামীর ‘পেইড এজেন্ট’ ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোড় দাবী জানাচ্ছি।