রংধনু গ্রুপের রফিক ও মিজানের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

রংধনু গ্রুপের রফিক ও মিজানের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

রুপগঞ্জে জমি দখল ও দখল বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিক ও তার ভাই রংধনু গ্রুপের পরিচালক মিজানুর রহমান মিজানের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা।

তারা জানান, রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের দখল বাণিজ্যের গুন্ডা বাহিনীর প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন মিজান। সম্প্রতি তিনি গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। তাই মিজানের পাশাপাশি রফিকুল ইসলামেরও গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিও জানান তারা।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় রূপগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণ ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় হিন্দু সম্প্রদায়সহ ভুক্তভোগী পরিবারের শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিক ও ম্যানেজার মিজানের বিরুদ্ধে মারধর ও জমি দখলের অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জ জেলার মুড়াপাড়ার সনাতন ধর্মাবলম্বী মিনি দাস বলেন, রফিক ও তার ছোট ভাই মিজান আমাদের বাড়িঘরের ২০ শতক জমি বালু ভরাট করে লুটপাট করছে এবং  মারধর করছে। আমাদের জায়গা সম্পদে বালু ভরাট করে আমাদের বসত বাড়ির জমি দখলে নিয়ে নিছে। তাকে (রফিক) কিছু বলতে গেলে সে প্রতিনিয়ত তাদের গুণ্ডাবাহিনী দ্বারা আমাদের সঙ্গে ঝামেলা করছে। যে কারণে আমরা বাড়িতে থাকতে পারছি না। এই আন্ডা রফিকের কারণে আমরা ভয়াবহ অবস্থায় আছি।

মানববন্ধনে বিচার চাইতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত স্বাধীনের নানা রেজাউল করিম। তিনি বলেন, আমার নাতি হত্যার বিচার চাই। জায়গা-জমির জন্য তারা আমার নাতিরে মাইরা ফালাইছে। ১০ মাস হলো, আমার নাতি আমাকে নানা বলে ডাকে না। আমার গলা জড়ায়ে ধরে এখন আর কেউ ঘুমায় না। টাকার অভাবে আমি মামলাও করতে পারি নি। আমি জায়গা-জমি কিছুই চাই না, শুধু আমার নাতিকে চাই।

নিহত স্বাধীনের মা ঝর্ণা বলেন, জমি দখলের জন্য আন্ডা রফিকের হয়ে সন্ত্রাসী মিজান, শফিক ও জসু আমার একমাত্র ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমার ছেলে এসএসসি পাশ করছিলো। বাসায় এসে তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। বাড়ি ঘর ভেঙে ফেলেছে। আমাদের নিঃস্ব করে দিয়েছে। ওরা আমাকে কেন মেরে ফেলে নাই..। দারোগার কাছে বিচার দিয়াও কোনো লাভ হয় নাই। আমি এটার তদন্ত চাই, খুনিদের ফাঁসি চাই। এর বেশি আমি আর কোনো কিছু চাই না। ওগো জালায় কেউ শান্তিতে থাকতে পারি না।

নিহত স্বাধীনের বাবা শাহীন আলম বলেন, জমির জন্য ছেলেকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে। গত বছর ১৫ ডিসেম্বর খিলগাও থানায় মামলা কর‍তে গিয়েছি। থানার ওসি জানিয়েছে রফিক-মিজানের নাম বাদ দিলে মামলা নেবে। প্রশাসনের কোথাও গিয়ে আমরা সুষ্ঠু বিচার পাইনি।

রংধনুর রফিক ও মিজানের প্রতারণার শিকার হয়ে ভুক্তভোগী সাজেদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, আমার ভাই আব্দুল্লা আল মামুনের কাছে থেকে ৮৫ লাখ টাকা নিয়েছে তারা। মানুষের জমিগুলো তারা জোর করে দখল করে নিত। জমির মালিককে পাওনা না দিয়েই পুকুর-আবাদি জমি বালু ফেলে ভরাট করে নিত। আন্ডা রফিকের গুন্ডাবাহিনী হয়ে মিজান এসব কাজ করতো। এখনও জমিগুলো উদ্ধার হয় নি। তাদের ৪০০-৫০০ জনের গুন্ডা বাহিনী আছে। এখনও তাদের দখল বাণিজ্যে চলছে। আমাদের এলাকার অন্তত ২০০-৩০০ বাড়ির মানুষ ভুক্তভোগী। মিজান আটক হয়েছে, আমাদের দাবি, তার ফাঁসির রায়ের পাশাপাশি আন্ডা রফিককে গ্রেফতার করা হোক।

বিচারের দাবিতে জড়ো হয়েছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। এসময় তাদের হাতে 'বেনজিরের ক্যাশিয়ার আন্ডা রফিকের ফাঁসি চাই'; রূপগঞ্জের কসাই আন্ডা রফিকের ফাঁসি চাই; অসংখ্য মায়ের বুক খালি করা খুনি রফিকের ফাঁসি চাই; স্বাধীন হত্যার বিচার চাই; 'ছাত্র জনতা হত্যার বিচার চাই'লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা যায়।