বিদেশফেরত অভিবাসীদের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন
বিদেশফেরত অভিবাসীদের তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর সহায়তায় ‘রিটার্নিং মাইগ্রেন্টস ম্যানেজমেন্ট অব ইনফরমেশন সিস্টেম (রেমিমিস)’ নামক একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
বিদেশফেরত অভিবাসীদের তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর সহায়তায় ‘রিটার্নিং মাইগ্রেন্টস ম্যানেজমেন্ট অব ইনফরমেশন সিস্টেম (রেমিমিস)’ নামক একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
এই রেমিমিস প্লাটফর্মটি অভিবাসন তথ্য ব্যবস্থাপনা ও নির্দিষ্ট পুনরেকত্রীকরণ সহায়তা কার্যক্রমকে শক্তিশালী ও উন্নত করতে ভূমিকা রাখবে। একইসাথে, অংশীদারগণ সহজেই বিদেশফেরত প্রবাসীদের দক্ষতা সংক্রান্ত তথ্য পাবেন এবং চাহিদা অনুসারে কমিউনিটি বা বিভিন্ন খাতে প্রবাসীদের দক্ষতা ছড়িয়ে দিতে পারবেন। এই সকল তথ্য উপাত্ত একদিকে যেমন বিদেশফেরত প্রবাসীদের বিপদাপন্নতা এবং চাহিদা বুঝতে নীতিনির্ধারকদের সহায়তা করবে, অন্যদিকে নির্দিষ্ট এবং প্রমাণভিত্তিক সুরক্ষা কার্যক্রম তৈরিতে সহায়তা করবে। রেমিমিস প্ল্যাটফর্মের তত্ত্বাবধানে থাকবে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। এই ডিজিটাল সিস্টেমে প্রবাসীদের তথ্য নথিভুক্ত করতে বিএমইটি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) এবং জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি (ডেমো) অফিস এর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।
১৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিএমইটি ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্ল্যাটফর্মটি উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদ। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন, বিএমইটি’র মহাপরিচালক মো. শামসুল আলম, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত র্যানচা টিয়ারিঙ্ক এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা-আইওএম বাংলাদেশ-এর মিশন প্রধন গিওরগি গিগাওরি।
প্ল্যাটফর্মটি উদ্বোধনকালে মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, “ফিরে আসা অভিবাসীদের তথ্য সংরক্ষণের জন্য একটি সমন্বিত ডাটাবেজের প্রয়োজনীয়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার পর। রেমিমিস ডাটাবেজ এখন আমাদের এই চাহিদা পূরণে সহযোগিতা করবে। এই প্লাটফর্মের মাধ্যমে আমরা ফিরে আসা অভিবাসীদের জ্ঞান ও দক্ষতা কাজে লাগাতে পারবো এবং এর ফলে তারা রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হবেন না। অভিবাসনের পূর্বে অভিবাসীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আমরা বিনিয়োগ করেছি এবং তাদের সেই দক্ষতা এখন কাজে লাগাতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, রেমিমিস প্লাটফর্ম অভিবাসীদের সঠিক পুনরেকত্রীরণে সহযোগিতা করবে এবং অভিবাসনে সুশাসন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করবে।”
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন বলেন, “দেশে দায়িত্বশীল অভিবাসন ও অভিবাসনে সুশাসনের ডিজিটালাইজেশনের প্রতিশ্রুতির অন্যতম উদাহরণ রেমিমিস। হালনাগাদকৃত তথ্য নিশ্চিতে এবং অভিবাসন ব্যবস্থার উন্নয়নে এই সিস্টেম ব্যবহারের জন্য এ খাতে যুক্ত সবাইকে আমি উৎসাহিত করতে চাই।”
বিএমইটি মহাপরিচালক জনাব মো. শামসুল আলম বলেন, “এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে অংশীদারগণ কোভিড-১৯ সংকটের কারণে বিদেশফেরতসহ বিপদাপন্ন অভিবাসীদের চিহ্নিত করতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি এই সিস্টেমের মাধ্যমে অভিবাসীদের কাছে অভিবাসন সেবা ও অন্যান্য সহায়তা সহজে পৌঁছে দেয়া যাবে ।
”আইওএম বাংলাদেশ মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন, “বাংলাদেশে নিয়মিত, বিধিসম্মত এবং নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতে সরকার যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তার একটি ভালো উদাহরণ হলো এই রেমিমিস। এই প্লাটফর্মটি অভিবাসী কর্মীদের নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে এবং অভিবাসনের সুবিধা কমিউনিটি পর্যায়ে পৌঁছে দিতে ভূমিকা রাখবে। এ ধরণের উপাত্তভিত্তিক অভিবাসন ব্যবস্থাপনা সিস্টেম তৈরিতে সরকারের চলমান প্রচেষ্টাকে আমরা স্বাগত জানাই।”
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত র্যানচা টিয়ারিঙ্ক বলেন, “রেমিমিস প্লাটফর্মটি সরকার, বিশেষ করে বিএমইটিকে, বিদেশফেরত অভিবাসীদের সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পেতে সহায়তা করবে। প্লাটফর্মটির মাধ্যমে অভিবাসীদের বয়স, লিঙ্গ, শিক্ষা, অভিাবাসনের দেশ এবং দক্ষতাসহ নানা তথ্য সহজে জানা যাবে। এটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, পার্টনার এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে সহায়তা করবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই প্লাটফর্মটি সরকারকে আগমাীতে উপাত্তভিত্তিক সঠিক নীতি তৈরিতে সহায়তা করবে, যার মাধ্যমে বিদেশ ফেরত অভিবাসীরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে।”
এই রেমিমিস প্লাটফর্মটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত প্রত্যাশা প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পটির নেতৃত্বে আছে বাংলাদেশ সরকার এবং বাস্তবায়ন করছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা- আইওএম।