বিএনপির রাজনীতি করায় কারা ভোগ করছেন ওবায়দুল্লাহ

বিএনপির রাজনীতি করায় কারা ভোগ করছেন ওবায়দুল্লাহ

কখনও কারাগার। কখনও জজ কোর্ট। আবার কখনও বা হাইকোর্ট। এভাবেই প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে ঘুরছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং উচ্চমান সহকারী মো: ওবায়দুল্লাহের পরিবার। 

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওবায়দুল্লাহ ও তার পরিবারের মাঝে নেমে আসে কালো মেঘ।প্রতি পদে পদে হতে থাকেন হয়ারানির শিকার। বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় ২০১১ সালে ওবায়দুল্লাহর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা। উচ্চমান সহকারী মো: ওবায়দুল্লাহকে ঐ বছরই সাময়িক বরখাস্ত করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। ২০১২ সালে উচ্চমান সহকারী মো: ওবায়দুল্লাহকে পূর্নাঙ্গভাবে বরখাস্ত করা হয় । 

জিয়া পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং উচ্চমান সহকারী মো: ওবায়দুল্লাহ ২০১৩ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট থেকে চাকরি পুনর্বহালের জন্য স্টে অর্ডার ইস্যু করে। তবে আদেশটি একাধিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করা হলেও তা গ্রহণ করা হয়নি। তবে, হাইকোর্টের আদেশ না মেনে উল্টো ২০১৪ সালে নিম্ন আদালতে ওবায়দুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ । ১০ বছর পর সেই মামলায় ২০২৪ সালে সাজা দেয় আদালত। রায়ের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে আত্মসমর্পণ করেন ওবায়দুল্লাহ। 

আত্মসমর্পণের পর উচ্চমান সহকারী মো: ওবায়দুল্লাহর পরিবারের পক্ষ থেকে ফের হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।

এভাবেই কষ্টের কথা গুলো তুলে ধরেন ওবায়দুল্লাহর মেয়ে আতিকা জান্নাত ঐশ্বী। তিনি বলেন, আমার বাবা বিএনপির রাজনীতি করায় তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে এবং তাকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বাবার চাকরি সূত্রে গাজীপুরে থাকতে হয়েছে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর থেকেই নানা মূখী হয়রানীর হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

ঐশ্বী বলেন, সেই সময় যারা বিএনপি সমর্থক বা রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন তাদের কেউ গুম, কেউ বা খুন। আবার হাজার মানুষকে চাকরিচ্যুত করা হয়। বিভিন্ন মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়েও হয়রানি করা। ঠিক তেমনি আমার বাবাকে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

ওবায়দুল্লাহর মেয়ে আতিকা জান্নাত ঐশ্বী আরও জানান, ২০১৪ সালে বাবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। সেই মামলা প্রতিনিয়তই হাজিরা দিতে থাকেন বাবা। তবে, কোর্টে যাতে হাজিরা দিতে না যান সে জন্য প্রতি নিয়তই হুমকি দেয়া হতো। এক পর্যায়ে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হয় বাবাকে। পরে আমরা গাজীপুর এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলে আছি। পরে, বাবা কোর্টেও যাওয়া বন্ধ করে দেন বলেও জানান ঐশ্বী।

তিনি বলেন, প্রায় ১০ বছর ধরে সেই মিথ্যা মামলার দ্বারা আমার বাবা এবং আমার পুরো পরিবার নির্যাতিত এবং নিপীড়িত। 

আতিকা জান্নাত ঐশ্বী বলেন, আমরা হাইকোর্টে এই মিথ্যা মামলার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে জামিন আবেদন করেছি। এখনও জামিন আমরা পাইনি।

তবে হাইকোর্ট থেকে আমরা সঠিক বিচার পাবো বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 

স্বৈরাশাসকের দোসরদের কারণে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে হয়রানীর শিকার হয়েছে পরিবার বলে দাবি করেছেন ওবায়দুল্লাহর মেয়ে আতিকা জান্নাত ঐশ্বী। যারা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন তাদের বিচারের দাবিও জানান তিনি।