বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ছয় দফা ছিল ‘ম্যাগনা কার্টা’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর উত্থাপিত ৬ দফা দাবি ছিল বাঙালির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক দলিল ‘ম্যাগনা কার্টা’। এটি দেশের স্বাধীনতার জন্য জনগণকে প্রস্তুত করেছিল।
তিনি বলেন, ‘ছয় দফা দাবি ছিল দেশের স্বাধীনতার জন্য জনগণকে পুরোপুরি প্রস্তুত করা এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পক্ষে জনগণকে প্রস্তুত করা।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রকৃতপক্ষে, এটি ছিল ‘ম্যাগনা কার্টা’ যার মাধ্যমে দেশের মানুষ নিজেদের স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করেছিল।’ প্রধানমন্ত্রী আজ ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এ সব কথা বলেন।
তিনি তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এই সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘পরবর্তীতে ছয় দফা এক দফায় পরিণত হয় এবং এক দফার পথ ধরেই আমরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করি। আর ১৯৭০ এর নির্বাচন ও এই ৬ দফার ভিত্তিতেই হয়।’
তিনি বলেন, এই ৬ দফা ছিল মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত করা এবং মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করায় ‘ম্যাগনা কার্টা’ ছিল এই ৬ দফা। যার মধ্য দিয়ে মানুষ সেভাবে তৈরি হয়েছিল। সেখান থেকেই আমরা এক দফায় চলে এসে স্বাধীনতা অর্জন করেছি এবং ৬ দফা কিন্তু মনু মিয়াদের রক্ত দিয়েই রক্তের অক্ষরে লিখে দেয়া হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, এই ৬ দফা মূলত এক দফাই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য। যেটা জাতির পিতা ইশারায় দেখাতেন এক হাতের পাঞ্জা এবং আর এক হাতের তর্জনি প্রদর্শন করে এবং আবার তর্জনির ওপর জোর দিতেন অর্থাৎ আসলে এক দফা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় বিশ্বাস ও আস্থা ছিল যা প্রকৃতপক্ষে তাঁর সাহস, সততা, বিশ্বাস ও দূরদর্শিতা থেকে এসেছে এবং সে কারণেই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
বঙ্গবন্ধু নিজেই ৬ দফা দাবি প্রণয়ন করেছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আলফা ইন্স্যুরেন্সের চাকরি জীবনে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তৎকালীন ব্যক্তিগত সহকারি পরবর্তীতে ঢাকার নির্বাচিত প্রথম মেয়র মোহাম্মদ হানিফ টাইপরাইটার মেশিনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর উল্লেখ করা পয়েন্ট গুলো টাইপ করে গিয়েছেন।
সূচনা বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গণভবন থেকে সভা সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, এমপি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ছয় দফা দাবি আদায়ে, ’৭৫ এর ১৫ আগষ্টের শহিদ এবং অন্যান্য গণ আন্দোলনের শহিদসহ সীতাকু- কন্টেইনার ডিপোর অগ্নিকান্ডে নিহতদের স্মরণে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।
আজ ৭ জুন ঐতিহাসিক ছয়-দফা দিবস। ১৯৬৬ সালের এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬-দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়।
এই দিনে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে টঙ্গি, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তৎকালীন পুলিশ ও ইপিআর-এর গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন বাঙালি শহিদ হন। এর পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপোসহীন সংগ্রামের ধারায় ‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় পরাধীন বাঙালি জাতি।
৬-দফার মূল বক্তব্য ছিল, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয় ছাড়া সকল ক্ষমতা প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকবে। পূর্ববাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানে দু’টি পৃথক ও সহজ বিনিময়যোগ্য মুদ্রা থাকবে। সরকারের কর, শুল্ক ধার্য ও আদায় করার দায়িত্ব প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকাসহ দুই অঞ্চলের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার আলাদা হিসাব থাকবে এবং পূর্ববাংলার প্রতিরক্ষা ঝুঁকি কমানোর জন্য এখানে আধা-সামরিক বাহিনী গঠন ও নৌবাহিনীর সদর দফতর স্থাপন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই যে চিন্তা চেতনাগুলো জাতির পিতার মধ্যে লালিত ছিল তার পুরোটাই প্রতিফলিত হয়েছিল ৬ দফা প্রণয়নের মাধ্যমে। আর তাঁর সুযোগও এসে গেল ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের মধ্যদিয়ে, যখন দেখা গেল এই অঞ্চলের মানুষ সম্পূর্ণ নিরাপত্তাহীন। সেই সময় তিনি এই ৬ দফার দাবিটা উত্থাপন করেন।
তিনি বলেন, এই ৬ দফার ভিত্তিতেই ’৭০ এর নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচন হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সমগ্র পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায়। যেটা পাকিস্তানীরা কোনদিনই আশা করেনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ’৬২ সালে একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সশস্ত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা আনা যায় কি না, কিন্তু সেটা হয়নি। তারপরই বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হয়ে গিয়েছিলেন। পরে ’৬৬ সালে এই ছয় দফা দেন। এটি জনপ্রিয় হয় এবং সফলতা পায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা লাহোরে যখন ছয় দফা পেশ করতে যান, নেতারা অনেকে বাধা দিয়েছে। কিছু দালাল বাঙালিও এটা দিতে দেয়নি। পরে তিনি এটা প্রেসে প্রকাশ করেন, যে কারণে তার জীবনের ওপরও হুমকি আসে। পরে দেশে ফিরে তিনি প্রেস কনফারেন্স করে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে ছয় দফা উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এই ছয় দফা নিয়ে ৩২ দিনের মধ্যে পুরো দেশের প্রত্যেকটা অঞ্চল সফর করেন। তৎকালীন ১৯টা জেলা এবং বিভিন্ন মহকুমায় নিজে সফর করেন। ৩৫ স্পটে নিজে বক্তব্য দিয়েছেন। যেখানে দলের সম্মেলন হয়নি, সেখানেও সম্মেলন করেন।
সরকার প্রধান বলেন, আন্দোলনের জন্য মানুষকে তৈরী করতে আওয়ামী লীগের পক্ষে ৬ দফার ব্যাখ্যা সম্বলিত ব্যাপকহারে প্রচারপত্র তৈরী, লিফলেট, বুকলেট তৈরী করা এবং বিলি করা হয়। যে কারণে জনগণ এই ৬ দফাকে খুব দ্রুত মেনে নেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার বার্তা তিনি সেখান থেকেই পৌঁছে দেন কৌশলে। হঠাৎ করেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার কথা বলেননি। তিনি বাঙালিদের প্রস্তুত করেছেন। সংগঠন করেছেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। শোষণ-বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরে অধিকার আদায়ে সচেতন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয়, পৃথিবীতে এমন কোনো দাবি পাওয়া যাবে না, যেটা ছয় দফার মতো কম সময়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। স্বাধীনতাকে লক্ষ্য নির্ধারণ করে ’৬১ সালে ছাত্রনেতাদের নিয়ে নিউক্লিয়াস গঠন করার পাশাপাশি মানুষকে ধীরে ধীরে প্রস্তুত করার কাজটি ছাত্রলীগের মাধ্যমেই করেছিলেন জাতির পিতা। জাতির পিতা মে মাসে গ্রেফতারের পর ৬ দফা বাস্তবায়ন এবং জাতির পিতার মুক্তির দাবিতে ৭ জুন আহূত হরতালে তাঁর মা এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে ইতিহাসে স্বীকৃত তাঁর কতিপয় ভূমিকারও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ৭ জুনের হরতাল সফল করার জন্য আমার মা’ বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি ইন্টালিজেন্স ব্রাঞ্চের চক্ষু বাঁচিয়ে আমাদের ছাত্রদের সঙ্গে, সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে হরতাল সফর করার জন্য অনেক কাজ করেছেন। যে হরতালে মনু মিয়া, আবুল হোসেনসহ ১১জন আত্মাহুতি দেন অর্থাৎ ৬ দফা দাবির প্রতি জনগণের যে সমর্থন তা রক্তের অক্ষরেই লিখে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, জাতির পিতার ৬ দফার দাবি উত্থাপনের পর তিনি কারাগারে থাকাকালীনই এর বিরুদ্ধে ৮ দফা প্রণয়নের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র করা হয়। তৎকালীন অনেক বড় বড় নেতৃবৃন্দও ৮ দফার পক্ষে অবস্থান নেন। কিন্তু বঙ্গমাতার কঠোর অবস্থানের কারণেই সেই ৬ দফাকেই সকলে মানতে বাধ্য হন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী সে সময়কার স্মৃতিচারণ করে বলেন, সেই সময় ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করাটা ছিল কঠিন একটি কাজ। যেখানে বঙ্গমাতা একটি দৃঢ় পদক্ষেপ নেন। আসলে ৮ দফা ছিল শুভংকরের ফাঁকি। কেননা ৬ দফার মধ্যেই আমাদের স্বাধীকার এবং স্বাধীনতার বীজ বপিত ছিল।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জাতির পিতাকে ক্যান্টনমেন্টে আটককালীন তাঁকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে পাকিস্তানের সামরিক জান্তার সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাবও বঙ্গমাতা নাকচ করে দেন, যেটাকে জাতির পিতাও সমর্থন করেন।
’৭৫ এর পর দেশে সংঘটিত ১৯-২০টি ক্যুর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সে সময়ে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা দেশে বিরাজ করে। কত মুক্তিযোদ্ধা অফিসারকে, সিপাহী জনতা বিপ্লবের নামে ঘরে ঘরে ঢুকে অফিসার-স্ত্রী পরিজনকেও হত্যা করা হয়েছে। দফায় দফায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে এবং আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরই বলতে গেলে এদেশে স্থিতিশীলতা ফিরেছে। এজন্য তাঁর দলের নেতা-কর্মীকে অনেক জেল জুলুম অত্যাচার-নির্র্যাতনও সহ্য করতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জেল-জুলুম সহ্য করে আজকে দেশে স্থিতিশীলতা আমরাই আনতে পেরেছি। তারপরও বার বার প্রচেষ্টা, আমাদের সরকারকে উৎখাতই করতে হবে।
সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এই প্রথম ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে দেশে টানা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশের উন্নতি হয়েছে। ক্ষমতায় থেকে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সুযোগ দেওয়ার জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বিশ্ব মন্দাতে উন্নত দেশগুলোকেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। ইউরোপ ও আমেরিকায় মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই সব দেশে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে।
অনেক উন্নত দেশের খাদ্য সংকটের উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইংল্যান্ডের মানুষকে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। ভোজ্যতেল এক লিটারের বেশি কেউ কিনতে পারবে না, এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে।
বাংলাদেশে ভর্তুকি দিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখনও তাঁর সরকার সবার খাদ্য ওষুধ, ভ্যাকসিন সববিছুর সরবরাহ অব্যহত রাখতে পেরেছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি। রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে তুলেছিলাম। সেই টাকা ভেঙে ভেঙে বিদ্যুৎ, গ্যাস, কৃষি ও স্বাস্থ্যের জন্য ভর্তুকি এবং সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। এভাবে কোনও দেশ করেনি।
বিনামূল্যে করোনা টিকা ও করোনা পরীক্ষা করার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারপরেও কেউ যদি গোলমাল করার চেষ্টা করে, আর এই দেশটা যদি একেবারে স্থবির হয়ে যায় তাহলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থাটা হবে?
গ্রামের মানুষের অবস্থা এখনও অনেক ভালো আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সেটা যাতে ভালো থাকে, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছি। যে কারণে, আমি আহ্বান করেছি, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। কারণ বিশ্বব্যাপী খাদ্যাভাব, খাদ্য মন্দা। সেখানে আমাদের নিজেদের মাটি আছে, মানুষ আছে, ফসল ফলাতে হবে। নিজেদের খাবারের ব্যবস্থাটা অন্তত আমরা নিজেরা করবো।
সবাইকে মিতব্যয়ী হবার এবং খাদ্য অপচয় না করার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই সঞ্চয় করুন। কেননা সবকিছুতো আর সরকার করতে পারবে না। নিজেকেও করতে হবে। এটা আমি আমাদের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণকে বলবো। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তাড়াতাড়ি থামবে না বলেও অভিমত ব্যক্ত করে এ যুদ্ধের কারণে আমদানী পণ্যের পরিবহন ব্যয় অত্যাধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় জিনিষপত্রের দামে এর প্রভাব পড়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েকদিন ধরে দেখতে পাচ্ছি গার্মেন্টস শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন। তৈরি পোশাক খাত অস্থির করতে কারা উসকানি দিচ্ছে সেটা দেখতে হবে।
তিনি বলেন, আন্দোলন করে, ঠিক আছে। কিন্তু যেসব দেশ আমাদের তৈরি পোশাক কিনবে। আমরা ভালো সুবিধা পাচ্ছি। উৎপাদন বাড়ছে। এ সমস্ত শ্রমিকদের বেতন তো বন্ধ হয়নি। আমরা তো নিজেরা প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি। মালিকদের বলে কয়েক দফায় বেতন বাড়িয়ে, ভর্তুকি দিয়ে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা যাতে বেতনটা সরাসরি পায়, সেই ব্যবস্থাও করেছি।
তিনি আরও বলেন, আজকে বেতন বাড়াও, এটা সেটাসহ নানা ধরনের আন্দোলন করতে যায়। পোশাক রফতানি যদি বন্ধ হয়, তাহলে কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। তখন ‘আমও যাবে, ছালাও যাবে’। বেতন আর বাড়বে না, তখন চাকরিই চলে যাবে। তখন কী করবে? যে নেতারা উস্কানি দিচ্ছে তারা কাদের প্ররোচনায় উস্কানি দিচ্ছে সেটাও একটু ভেবে দেখতে হবে। কারণ যুদ্ধেও কারণে এবং বৈশ্বিক মন্দায় ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতাও কিন্তু সীমিত হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, কারো কথায় কেউ পরিবেশ অশান্ত করলে দেশের ক্ষতি নিজেরও ক্ষতি। কেউ আশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করলে, আমি বলবো শেষে এ কূল, ও কূল, দু কূল হারাতে হবে। এটাও সবাইকে মনে রাখতে হবে। সুত্র-বাসস।