ওকাপের দাবি : রেমিট্যান্সের ১০ শতাংশ তাদের উন্নয়ন বাজেট হিসাবে বরাদ্দ দিন
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শ্রম অভিবাসন এবং অভিবাসী কর্মীদের ভুমিকা অপরিসীম। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর হিসাব মতে, বাংলাদেশ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় এক কোটি ত্রিশ লক্ষ কর্মক্ষম মানুষ সরকারি প্রক্রিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কর্মরত।
imrat24@gmail.com
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শ্রম অভিবাসন এবং অভিবাসী কর্মীদের ভুমিকা অপরিসীম। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর হিসাব মতে, বাংলাদেশ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় এক কোটি ত্রিশ লক্ষ কর্মক্ষম মানুষ সরকারি প্রক্রিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কর্মরত।
বর্তমান সরকারের গত ১০ বছরে সরকারিভাবে অভিবাসন করা মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬০ লক্ষ (৫,৯৮৪,৯৪৩)। একই সময়ে অভিবাসী কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ১,০৮১,৯৯২.৪৬ কোটি টাকা। করোনা আক্রান্ত অর্থবছরেও (২০১৯-২০) বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ১৫৪,৭৮৫ কোটি টাকা যা করোনা পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ৯.৬ গুন বেশী।
অভিবাসী কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভুমিকা রাখছে যা বিভিন্ন সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের প্রশংসনীয় উত্তরণ ঘটিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বের উন্নয়ন মডেল হিসাবে তৈরী করেছে। অভিবাসী কর্মীদের যথেষ্ট অবদান সত্ত্বেও অভিবাসী কর্মীর অধিকার, কল্যাণ ও সুরক্ষার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রের উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। গত কয়েক বছরের জাতীয় বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা যায় অভিবাসী কর্মীদের জন্য বরাদ্দকৃত উন্নয়ন বাজেটের পরিমাণ এক শতাংশেরও কম ।
অনিরাপদ ও অস্বচ্ছ নিয়োগ-প্রক্রিয়ার কারনে অনেক অভিবাসী কর্মী বিদেশে গিয়ে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ বা বেতন কোনটাই পায় না এবং শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়। অনেক নারী অভিবাসী গৃহকর্মী বিভিন্ন ভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফেরত আসে। বেশীর ভাগ অসুস্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত বিদেশ ফেরত অভিবাসী কর্মী টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে পারে না। অভিবাসনের জন্য নেয়া ঋণ পরিশোধ করতে না পারা কিংবা কর্মসংস্থানের বাবস্থা করতে না পেরে অনেক ফেরত অভিবাসী কর্মী সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বিসহ জীবন যাপন করে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারনে কাজ হারিয়ে ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মী দেশে ফেরত আসতে বাধ্য হয়েছে। এদের প্রায় ৬৩ শতাংশ অভিবাসী কর্মীকে পাওনা বেতন, বোনাস বা গ্র্যাচুইটি না দিয়েই সম্পূর্ণ শূন্যহাতে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এমতাবস্থায়, আসন্ন ২০২১-২২ জাতীয় বাজেটে অভিবাসী কর্মীদের উন্নয়ন, কল্যাণ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তৃণমূল অভিবাসী সংগঠন “ওকাপ” এর পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত দাবীগুলো উত্থাপন করা হলোঃ
• অভিবাসী কর্মীদের পাঠানো বার্ষিক রেমিট্যান্সের উপর কম পক্ষে শতকরা ১০ শতাংশ উন্নয়ন বাজেট হিসাবে অভিবাসীদের উন্নয়ন, কল্যাণ ও সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ দিতে হবে ।
• সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিদেশ ফেরত অভিবাসী কর্মী বিশেষ করে নারী অভিবাসী কর্মীদের জাতীয় ‘সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনীতে’ অন্তর্ভুক্ত করে মাসিক ভাতা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
• অভিবাসী কর্মীদের সুরক্ষার জন্য ‘সোশাল বেনিফিট’ নিশ্চিত করতে ‘প্রভিডেন্ট ফান্ড’ চালু করতে হবে এবং এই জন্য আসন্ন অর্থ বছরে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে ।
প্রকৌশলনিউজ/এসএআই
