'ওমিক্রন' অত্যন্ত বিপজ্জনক : ডব্লিউএইচও
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া মহামারী করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট 'ওমিক্রন' বিশ্বের অন্তত ১৩টি দেশে ছড়িয়ে পড়ায় ‘অত্যন্ত ঝুঁকি’ তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। পাশাপাশি ভাইরাসের এই ধরনকে মোকাবিলায় বিশ্বকে দ্রুত প্রস্তুতি নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক এই সংস্থা।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া মহামারী করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট 'ওমিক্রন' বিশ্বের অন্তত ১৩টি দেশে ছড়িয়ে পড়ায় ‘অত্যন্ত ঝুঁকি’ তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। পাশাপাশি ভাইরাসের এই ধরনকে মোকাবিলায় বিশ্বকে দ্রুত প্রস্তুতি নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক এই সংস্থা।
সোমবার 'ওমিক্রন' নিয়ে জেনেভায় ডব্লিউএইচওর সদর দফতর থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, ১৯৪টি সদস্যদেশকে টিকাদান কর্মসূচির গতি আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে ডব্লিউএইচও। সংক্রমণের নতুন ঢেউ দেখা দিলে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে; সে বিষয়ে পরিকল্পনাও দ্রুত নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ‘মূল করোনাভাইরাস ও তার অন্যান্য রূপান্তরিত ধরনের তুলনায় ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনের সংখ্যা অনেক বেশি। সংস্থাটির আশঙ্কা, এটি মহামারির পুরো চিত্র আরও বিপর্যয়কর করে তুলতে পারে।’
আগের সব ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় সম্ভাব্য অতি-সংক্রামক 'ওমিক্রন' গত বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়। এরপর থেকে এই ভ্যারিয়েন্ট অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, বতসোয়ানা, ব্রিটেন, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ইসরায়েল, ইতালি এবং নেদারল্যান্ডস ও স্কটল্যান্ডে শনাক্ত হয়েছে।
ওমিক্রনকে ‘উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট’ হিসেবে তালিকাভূক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, ‘এই ভ্যারিয়েন্টের তীব্রতার মাত্রা বোঝার জন্য কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত লাগতে পারে।’
শনাক্ত হওয়ার পর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা বা অন্য কোনো দেশে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেছেন—এমন সংবাদ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি এখনও আসেনি ধরনটির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও। তবে এ পর্যন্ত যে পরিমাণ তথ্য উপাত্ত বিজ্ঞানীদের হাতে পৌঁছেছে, তাতে এটি মূল করোনাভাইরাস ও তার অন্যান্য ধরনের তুলনায় অনেক বিধ্বংসী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবৃতিতেও তার প্রতিফলন পাওয়া গেছে। সংস্থাটি বলেছে, ‘এই ধরনটির প্রভাবে দৈনিক সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে এবং সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পেতে পারে করোনায় গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যাও। যদি এমন হয়, সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসার চাহিদা ব্যাপকভাবে বাড়বে বিশ্বজুড়ে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে করোনায় মৃত্যুর হারও। যেসব দেশে টিকাদান কম হয়েছে, সেই সব দেশের বয়স্ক লোকজন বিশ্বে এই মুহূর্তে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন’।
মহামারি পরিস্থিতি যখন অনেকেটাই স্বাভাবিকের দিকে ফিরছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন বিশ্বজুড়ে ফের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনার সবচেয়ে ‘ভয়াবহ ও খারাপ’ ধরন হিসেবে চিহ্নিত 'ওমিক্রন' টিকায় প্রতিরোধ হবে কিনা, করোনাজয়ীদের ফের এই ধরনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে কিনা-এসব বিষয় বিশেষজ্ঞদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। তবে ওমিক্রন নিয়ে প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, ইতোমধ্যে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদেরও নতুন এই ধরনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।