কাল ক্যাপ্টেন নওশাদের মরদেহ দেশে আসবে
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউমের মরদেহ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকায় পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর আলী।
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউমের মরদেহ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকায় পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর আলী।
বুধবার সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের হোটেল-মোটেলের অনলাইন বুকিং সিস্টেম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
জানা গেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে দোহা থেকে আসা একটি ফ্লাইট দেশে ফেরার পথে ভারতের নাগপুর থেকে মরদেহ এবং তার দুই বোনকে সঙ্গে নিয়ে দেশে ফিরবে। বিমানের এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে এখন ভারতের ফ্লাইট চালু নেই। ফলে এখন যে কোন ফ্লাইট অপারেট করতে গেলে বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হয়। মরদেহের মেডিক্যাল রিপোর্ট, বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতির জন্য কিছুটা সময় লাগছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এ কাজ করা হচ্ছে।
গত ২৭ আগস্ট ওমানের রাজধানী মাস্কাট থেকে ১২৪ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফেরার পথে ভারতের রায়পুরের আকাশে থাকাকালে হুট করে হার্ট অ্যাটাক করে নিথর হয়ে পড়েন ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউম। তখনই ককপিটের কন্ট্রোল নেন সঙ্গে থাকা ফার্স্ট অফিসার মোস্তাকিম। মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি ঘোষণা করে ক্যাপ্টেন নওশাদকে ও যাত্রীদের নিয়ে দ্রুত নাগপুরের ড. বাবা সাহেব আম্বেদকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করেন উড়োজাহাজটি। নাগপুরের একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ আগস্ট মারা যান নওশাদ।
নওশাদ আতাউল কাইউম ১৯৭৭ সালের ১৭ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে পাইলট হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ২০০০ সালের ১৩ নভেম্বর ক্যাডেট পাইলট হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে কাজে যোগদান করেন এবং প্রশিক্ষণ শেষে ২০০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এফ-২৮ এর ফার্স্ট অফিসার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তিনি ২০০৬ সালের ১৪ মে এয়ারবাস-এ-৩১০ উড়োজাহাজের ফার্স্ট অফিসার এবং ২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বোয়িং ৭৭৭ এর ফার্স্ট অফিসার হন। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি বোয়িং ৭৩৭ এর ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন এবং মৃত্যুর পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত তিনি এ পদেই কর্মরত ছিলেন।
তারা বাবা আব্দুল কাইয়ুমও একসময় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্যাপ্টেন ছিলেন। তিনি ডিসি-১০ উড়োজাহাজের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় ‘কোরিয়ান এয়ার’ এবং ‘সৌদি এয়ারলাইন্স’এ দায়িত্ব পালন করেন সিনিয়র এই পাইলট। ৬ মাস আগে নওশাদের বাবা আব্দুল কাইয়ুম মারা যান।
তার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী ও সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলটস এসোসিয়েশন (বাপা) সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শোক জানিয়েছেন।