পরিবেশ ধ্বংস করে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়
পরিবেশকে ধ্বংস করে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম।
পরিবেশকে ধ্বংস করে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম।
তিনি শনিবার বিকেলে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে 'টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা ও স্থপতি' শীর্ষক এক অনলাইন আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, পরিবেশ ধ্বংস এবং পৃথিবীর ভারসাম্য নষ্ট করে উন্নয়ন করলে সে উন্নয়ন টেকসই হবে না। টেকসই উন্নয়নের জন্য অবশ্যই পরিবেশ ও প্রতিবেশকে প্রাধান্য দিতে হবে।
পরিকল্পনাবিদ, স্থপতিসহ সভায় অংশ নেয়া সংশ্লিষ্ট সকলকে উদ্দেশ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে আবাসিক এলাকাগুলোতে এমন কোন ভবন করতে দেয়া যাবে না যার পাশে রাস্তা থাকবে না, খোলা জায়গা, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও স্যাপ্টিক ট্যাংক থাকবে না, আশপাশে স্কুল, খেলার মাঠ এবং স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা থাকবে না। বাসা বা এপার্টমেন্টে এসবের ব্যবস্থা না থাকলে নগরবাসীকে সেই বাসা ভাড়া অথবা অ্যাপার্টমেন্ট না কেনারও পরামর্শ দেন তিনি।
মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, শহরের সব সুযোগ-সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিতে সরকার গ্রামকে শহর-বানানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরের পরিবেশের বর্তমান অবস্থা দেখলে গ্রামের মানুষ এমন শহর কখনোই চাইবে না।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গ্রামকে শহরে রুপান্তরিত এমন ভাবে করতে হবে যাতে গ্রামের বৈচিত্র বিনষ্ট না হয়। গ্রামের নির্মল বাতাসের পরিবর্তে কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোঅক্সাইড, সালফার, ক্রোমিয়াম ও ক্যাডমিয়াম যুক্ত বাতাস মানুষ নিতে হয়।
মন্ত্রী আরো বলেন, শহরের সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিতে হলে ক্লাস্টার পদ্ধতিতে করতে হবে । এ পদ্ধতিতে ছাড়া শহরের সকল নাগরিক সুযোগ-সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া কঠিন হয়ে যাবে। বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।
রাজধানীর জলজট নিরসনে দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রানান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ সমস্যা নিরসনে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে এবং আরও সচেতনতার পরিচয় দিতে হবে। শহরকে ময়লা আবর্জনা থেকে মুক্ত করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
ওয়াসা থেকে ২৬টি খাল দুই সিটি কর্পোরেশনকে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকা অর্থাৎ রাজধানীর সকল খাল ও জলাশয় খুব শিগগিরই উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
মন্ত্রী জানান, রাজধানীসহ সারাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ইন্সেরশন প্লান্ট স্থাপন অর্থাৎ বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের করতে যাচ্ছে সরকার। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনসহ কয়েকটি সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া বর্জ্য কালেকশনের একটি মডেল নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ স্থপতি ইন্সিটিউট আয়োজিত অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্থপতি ও পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব।
প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস