রোম মসজিদের অপূর্ব সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ ইউরোপের মুসলিমরা

রোম মসজিদের অপূর্ব সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ ইউরোপের মুসলিমরা

সৌদি আরব বা মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও ইসলামিক স্থাপনার অপূর্ব নিদর্শণ রয়েছে সারা পৃথিবী জুড়েই। ইউরোপ আমেরিকাতেও রয়েছে ইসলামের ঐতিহাসিক কিছু নিদর্শণ। 

তেমনি খ্রিস্টান বিশ্বের কাছে ধর্মীয়ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইটালীর রোমেই রয়েছে ইসলামিক স্থাপত্যের অপূর্ব নিদর্শন, যেটির নাম রোম মসজিদ। বিশাল এই মসজিদটিকে ডাকা হয় ‘মস্কো দি রোমা’ নামে।

বিশাল এই মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯৮৪ সালে। নির্মাণকাজ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ১৯৯৫ সালের ১ জুলাই। তিন লাখ বিশ হাজার বর্গফুটের এই মসজিদটিতে একসঙ্গে ১২ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। আফগানিস্তানের রাজপুত্র মুহাম্মদ হাসান ও তার স্ত্রী রাজিয়া বেগমের উদ্যোগের পাশাপাশি সৌদি আরবের যুবরাজ ফয়সাল এই মসজিদ নির্মাণের জন্য অর্থ সহায়তা করেন।

ইসলামিক স্থাপত্য হিসেবে বেশ আলোচিত হলেও এর স্থপতি দুজনের কেউই মুসলমান নন। ইরাকি স্থপতি সামি মুসাভি ও ইতালীয় স্থপতি পাওলো পর্তোগেসি মসজিদ কমপ্লেক্সের নকশা তৈরি করেন। তবে নকশার জন্য ৪০ জন স্থপতি লে-আউট জমা দেন। 

বর্তমানে ইউরোপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও বৃহত্তম মসজিদ এ রোম মসজিদ। রোম নগরীর উত্তরাঞ্চলের অ্যাকুয়া অ্যাসেতোসা নামক এলাকায় সারিবদ্ধ বৃক্ষের সবুজ বেষ্টনীতে অবস্থিত এ মসজিদ কমপ্লেক্সে প্রশস্ত নামাজের জায়গা ছাড়াও রয়েছে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, মিলনায়তন, পাঠদান কেন্দ্র, উন্মুক্ত মাঠ, অজুখানা, শৌচাগার, লাশ গোসলকরণ ও নামাজে জানাজার ব্যবস্থা।

রোমান সিটি কাউন্সিল ১৯৭৪ সালে মসজিদ কমপ্লেক্সের জন্য ভূমি দান করে। উদ্বোধন করেন ইতালীয় প্রজাতন্ত্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট স্যান্ড্রো পার্টিনি।

মসজিদ স্থাপত্যের অন্যতম ১২৮ ফুট উঁচু মিনারটি বেশ দৃষ্টিনন্দন। অবশ্য সেন্ট পিটার্স গির্জার গম্বুজটি এর চেয়ে দুই ফুট বেশি উঁচু।

মসজিদটির নকশায় ইসলামি ঐতিহ্য ও আধুনিক ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয় সাধনের একটি আন্তরিক প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়। মসজিদটির অভ্যন্তরীণ স্তম্ভগুলো উত্তর আফ্রিকার পাম বৃক্ষের আদলে তৈরি। মসজিদের ভেতরে-বাইরে এমনভাবে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে যে, রাতের বেলা মনে হয়, যেন মসজিদের চার পাশে ঝরণার ফল্গুধারা প্রবাহিত।