৩ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা, তদন্তে সিআইডি

অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে এক চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

৩ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা, তদন্তে সিআইডি

অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে এক চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ জৌধুরীর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন মৃত ডা. তৌফিক এনামের বাবা আক্তারুজ্জামান মিয়া। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক), ৩৮৬, ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় অপরাধ আমলে গ্রহণ করিয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আবেদন করেন।

ডা. তৌফিক ছিলেন এভার কেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার। এদিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে এ আদেশ দেন। 

মামলায় কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালের প্রফেসর ডা. আব্দুল ওহাব খান (কনসালটেন্ট ল্যাপারোস্কপিক সার্জন), ল্যাবএইড হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডিপার্টমেন্টের ডা. মামুন আল মাহতাব ও বিআরবি হাসপাতালের প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আলীকে আসামি করা হয়। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ৩০ মে রাজধানীর বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডা. তৌফিক এনাম নামে এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়। বাদীর ছেলে ডা. তৌফিক এনামকে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে মামলাটির আবেদন করেন। 

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বাদীর ছেলে ডা. তৌফিক এনাম অসুস্থ হলে ৪ মে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল কাকরাইল শাখার ডা. আব্দুল ওহাব খানকে দেখান। এরপর তার অধীনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধরা পড়ে রোগীর গলব্লাডারে পাথর হয়েছে। পরের দিন ৫ মে বাদীর ছেলেকে ডা. ওহাব অপারেশন করেন। ৬ মে তাকে ছাড়পত্র দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেন। এরপর ৯ মে সন্ধ্যায় হঠাৎ অসুস্থ হলে ডা. ওহাব খানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আবারও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জরুরি ভিত্তিতে ল্যাবএইড হাসপাতালে ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। এরপর ল্যাবএইড হাসপাতালের ডা. স্বপ্নীলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনিও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দেখেন যে গলব্লাডার অপারেশনের সময় ভুল জায়গায় ক্লিপ লাগানো হয়েছে। এরপর ডা. স্বপ্নীল জেনেশুনে বেশি টাকার জন্য ইআরসিপি উইথ স্ট্যাংটিং করে ব্যর্থ চেষ্টা করেন। যার কারণে রোগীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। 

এ সময় তিনি জরুরি ভিত্তিতে বিআরবি হাসপাতালের প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আলীর কাছে পাঠান। ডা. ওহাব ও ডা. স্বপ্নীল দুইজনের পরস্পর যোগসাজশে অপর ডা. মোহাম্মদ আলীর কাছে পাঠানো হয়। ডা. মোহাম্মদ আলী গত ১২ মে জরুরি ভিত্তিতে রোগীকে বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করান। এরপর ডাক্তার মোহাম্মদ আলী রোগীর স্বজনদের বলেন, রোগীর অবস্থা ভালো না জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করতে হবে। তার আগে যে দুইজন অপারেশন করেছেন, সেখানে অবহেলা ছিল। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করতে হবে, অন্যথায় রোগীকে বাঁচানো যাবে না। 

এরপর গত ৩০ মে বাদীর ছেলেকে ডা. মোহাম্মদ আলীর মাধ্যমে বিআরবি হাসপাতালে অপারেশন করান। প্রথমে বাদীকে তিন ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হবে বলে জানান। ৩ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করার পর আবারও ৪ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন বলে জানান ডা. মোহাম্মদ আলী। রক্ত না দিতে পারলে রোগীকে বাঁচানো যাবে না। এরপর হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বাদীর স্বজনদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাদীর ছেলে ডা. তৌফিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস