লকডাউনের ১৩তম দিন : শেষের আগেই ‘স্বাবাভিক’ সব
কঠোর বিধিনিষেধ একদিন শিথিলতার পর রাজধানী আবার স্বাভাবিক অবস্থায় রাস্তাঘাটে বেড়েছে মানুষের উপস্থিতি। দোকানপাট খুলছে। রাস্তায় বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। মোড়ে মোড়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। অনেকটা শিথিল হয়ে পড়েছে পুলিশের চেকপোস্টগুলো। তল্লাশি বা কাউকে বাসা থেকে বের হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে না। সাধারণ নাগরিকরা যেন লকডাউনের কথা বেমালুম ভুলেই গেছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
কঠোর বিধিনিষেধ একদিন শিথিলতার পর রাজধানী আবার স্বাভাবিক অবস্থায় রাস্তাঘাটে বেড়েছে মানুষের উপস্থিতি। দোকানপাট খুলছে। রাস্তায় বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। মোড়ে মোড়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। অনেকটা শিথিল হয়ে পড়েছে পুলিশের চেকপোস্টগুলো। তল্লাশি বা কাউকে বাসা থেকে বের হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে না। সাধারণ নাগরিকরা যেন লকডাউনের কথা বেমালুম ভুলেই গেছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বুধবার গাবতলী-গুলিস্থান, মোহাম্মদপুর-সাইনবোর্ড, মিরপুর- গুলিস্থানসহ সব এলাকায় অবাধে চলছে সব। এর পাশাপাশি সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল করে। রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল বেড়ে যাওয়ায় সব রাস্তায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। শিল্প-কারখানা ও গার্মেন্টস খোলার পর অতিরিক্ত গাড়ির চাপে রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়।
রাজধানীর সড়কগুলোতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কোন চেকপোষ্ট চোঁখে পড়ে নাই, লকডাউনের শুরুতে যেখানে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা কড়া পাহারায় তল্লাসী করাতো সেখানে অনান্য দিনের তুলনায় নিষ্ক্রিয়। কোন কোন জায়গায় তাদের চোঁখেই পড়েনি। মোটকথা পুলিশের উদাসীনতা এবং সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে সব ধরনের যানবাহন ঢাকার রাস্তায় চলাচল করছে।
খোঁজনিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীতে মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এবং পর্যাপ্ত গণপরিবহন না থাকায় রাজধানীবাসী কর্মস্থলে এবং জরুরি কাজে যাওয়ার পথের চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। যানবাহনের জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। বাস বন্ধ রেখে অফিস খুলে দেওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। রাজধানীর শ্যামলী, মোহাম্মদ পুর ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে। এমনকি ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলও যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, কাকরাইল, পল্টন, মতিঝিল এলাকায়ও একই দৃশ্য দেখা গেছে।
মোহাম্মদপুরে এক বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আসাদ আল হাবিব জানায়, অফিস চালু থাকার কারণে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যেই অফিসে যেতে হয়। যেহেতু অফিসে যেতে হয় সেহেতু কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের সুফল মিলছে না।
ফার্মগেটে এক রিক্সা যাত্রী আক্ষেপ করে বলেন, আমরা যারা নিম্ন আয়ের মানুষ তারাই পড়ছি চরম বিপদে। রাস্তায় সব চলছে শুধু গণ পরিবহন নাই। এখন ১০ টাকার ভাড়া রিক্সায় ১০০ টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে।
গণভবন এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) আতিক মাহমুদ বলেন, আজকে ব্যাংক বন্ধ থাকায় অফিসে যাওয়া লোকজনের সংখ্যা কম। কিন্ত অনেকেই ব্যাক্তিগত কাজের জন্য বাহিরে বের হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা নিজেরাও সাধ্যমাত বোঝানোর চেষ্টা করছি মানুষদের তারা যেন অকারণে বের না হন। যতক্ষণ না মানুষ নিজেরা সচেতন না হয় ততদিন লকডাউন আইন দিয়ে বাস্তবায়ন সম্ভবনা।
সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার।
বিধিনিষেধের মধ্যে খাদ্য ও খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন/প্রক্রিয়াজাতকরণ মিল কারখানা, কোরবানির পশুর চামড়া পরিবহন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ওষুধ, অক্সিজেন ও কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদনকারী শিল্প-কারখানা ছাড়া বন্ধ আছে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারি ও বেসরকারি অফিস এবং শিল্পকারখানা। বন্ধ রয়েছে দোকান ও শপিংমলও। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের বাইরে বের হওয়াও নিষেধ।