চাল’বাজদের নিয়ন্ত্রণে আমদানি শুল্কে বড় ছাড়

চাল নিয়ে যারা চালবাজী করেন সেই চালবাজদের নিয়ন্ত্রন এবং চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বেসরকারিভাবে আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে সরকার। এরফলে, বাজারে চালের সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মনে করছেন সরকার।

চাল’বাজদের নিয়ন্ত্রণে আমদানি শুল্কে বড় ছাড়

চাল নিয়ে যারা চালবাজী করেন সেই চালবাজদের নিয়ন্ত্রন এবং চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বেসরকারিভাবে আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে সরকার। এরফলে, বাজারে চালের সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মনে করছেন সরকার।

রোববার সকালে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এ কথা জানান। সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী জানান, আমদানি শুল্ক ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ কমানো হয়েছে।

চালের দাম কমানো সহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের কথা জানান তিনি। কিছুদিন থেকে চালের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বাজারে দাম বেশি থাকায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আমন চালও সংগ্রহ করতে পারছে না সরকার। এ কারণে দফায় দফায় বেড়েছে চালের দাম। তাই এই অস্থির পরিস্থিতিতে চালের দাম স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নিলো সরকার।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন,‘চালের দাম নিয়ে ভোক্তাদের যাতে কষ্ট না হয়, আবার কৃষকও যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেজন্য নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় চাল আমদানির সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

তবে কেবল বৈধ আমদানিকারকরাই ১০ জানুয়ারির মধ্যে মন্ত্রণালয়ে চাল আমদানির আবেদন করতে পারবেন। সেখান থেকে মন্ত্রণালয় কাকে কী পরিমাণ আমদানি করতে দেবে সেই সিদ্ধান্ত জানাবে।

অনুমোদন পাওয়ার পর কোন আমদানিকারক কী পরিমাণ চাল আমদানি করেছে সেই হিসাবও রাখা হবে বলে জানান তিনি।


মন্ত্রী বলেন, সরকারিভাবে ৪ লাখ টন এবং দেড় লাখ টন জিটুজি পদ্ধতিতে এবং বেসরকারিভাবে চাল আমদানি করা হবে।

দাম না বাড়ালে চাল দেয়া হবে না- মিলারদের এমন হুমকির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার কারও হুমকিতে মাথানত করে না। আমরা মিলারদের চুক্তির জন্য পীড়াপীড়ি করিনি। তারা তাদের হুমকি নিয়ে থাকুক।’

তিনি বলেন, প্রয়োজন আমরা কৃষকের কাছ থেকে ধান বেশি করে কিনব। যাতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। দরকার হলে ১৫ থেকে ২০ লাখ টন চাল কিনবো। বেসরকারিভাবে যখন যতটুকু আমাদানি করা প্রয়োজন করা হবে। বোরো মৌসুম আসার আগে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার সেটাও করা হবে। বোরো মৌসুমে এ অবস্থা থাকলে আবারও আমদানি করা হবে।

সরকার কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু করেছে জানিয়ে সাধারণ চন্দ মজুমদার বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত মূল্য মণপ্রতি ১ হাজার ৪০ টাকা। কিন্তু বাইরে কৃষকরা ধান বিক্রি করে লাভবান হলে তখন সরকারের কাছে বিক্রি করে না। বাইরে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করছেন কৃষকেরা। চালের দর বাণিজ্য, কৃষি, অর্থ ও খাদ্য মন্ত্রণালয় মিলে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কিন্তু সহনীয় দাম নিয়ে কী করা যায়, সেটার কোনো নীতিমালা নেই। ধানের দাম কমলে আমরা কৃষকের জন্য হাহাকার করি। আবার চালের দাম বাড়লেও হাহাকার করি।’

একটা ন্যায্য দর ঠিক করতে নীতিমালা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই একটা স্ট্যান্ডার্ড রেট থাকতে হবে। এ জন্য সহনশীল স্ট্যান্ডার্ড রেট তৈরি করতে হবে। গত ২৩ ডিসেম্বর বৈঠক হয়েছে। সেখানে বাণিজ্য, কৃষি, অর্থ ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ছিলেন। একটা কমিটিও করা হয়েছে। সেই কমিটি নীতিমালা তৈরি করতে কাজ করবে। আর সেটা চূড়ান্ত হলে দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।’

এ বছর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে ধানের ফলন কম হয়েছে উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আবাদি জমি ঠিক থাকলেও আম্ফানের কারণে ফলন কম হয়েছে। তবে দেশে ধান-চালের ঘাটতি আছে, তা বলছি না। আমাদের আমদানিরও সুযোগ আছে।

তিনি বলেন, দেশে প্রায় ২০ হাজার মিল আছে। প্রতি মিলে গড়ে ৫০০ মণ ধান প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। কোথাও ১ হাজার মণও থাকে। হিসাব করলে ৩০ লাখ টন চাল থাকার কথা।