বিশ্বে করোনায় মৃত্যু প্রায় ৩৪ লাখ!
শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৩ লাখ ৮৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণে টালমাটাল হয়ে পড়েছে বিশ্বের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। থমকে গেছে বিশ্ব অর্থনীতির চাকা। দিন দিন আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে এ ভাইরাস। প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর সারি, আক্রান্তও হচ্ছে লাখে লাখে। মহামারি এ ভাইরাসের নতুন নতুন ধরন মানুষের মনে আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। ভাইরাসটির দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় বেড়েছে সংক্রমণ ও প্রাণহানির সংখ্যা। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৩ লাখ ৮৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
রোববার (১৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত করোনাভাইরাসের পরিসংখ্যান দেয়া ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ কোটি ৩১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৯ জন। আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬০৬ জন। এ ছাড়া আক্রান্ত থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৪ কোটি ১৪ লাখ ৭৮ হাজার ৯১৬ জন।
এ ছাড়া বিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১ হাজার ৮৮২ জন। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ২৭ হাজার ১৮২ জন।
আগের দিন শুক্রবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৯০ হাজার ৮৩২ জন। এ রোগে ওই দিন মারা গিয়েছিলেন ১২ হাজার ৫১১ জন।
প্রায় দুমাস ধরে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসাবে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে ভারত। শনিবারও এ রোগে সবেচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দেশটিতে। এই দিন ভারতে নতুন রোগীর তালিকায় নাম লিখিয়েছেন ৩ লাখ ১০ হাজার ৮২২ জন, মারা গেছেন ৪ হাজার ৯০ জন। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ কোটি ৪৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫ জন, মারা গেছেন ২ লাখ ৭০ হাজার ৩১৯ জন।
দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় ভারতের পরেই অবস্থান করছে ব্রাজিল। দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম এই দেশটিতে শনিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯ হাজার ৩০০ জন, মারা গেছেন ২ হাজার ৬৫ জন। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ কোটি ৫৫ লাখ ৯০ হাজার ৬১৩ জন, মারা গেছেন ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৮৫২ জন।
প্রায় দেড় বছর আগে মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসাবে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সম্প্রতি দেশটিতে ক্রমশ কমে আসছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ২৪ ঘণ্টায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের তালিকায় বর্তমানে তৃতীয় অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে শনিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৬০৯ জন, মারা গেছেন ৪৯৯ জন। যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮৩ জন, মারা গেছেন মোট ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৩ জন।
এক দিনে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় বর্তমানে চতুর্থ শীর্ষস্থানীয় দেশটির নাম আর্জেন্টিনা। দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই দেশটিতে শনিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২১ হাজার ৪৬৯ জন, মারা গেছেন ৪০০ জন। মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত আর্জেন্টিনায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩২ লাখ ৯০ হাজার ৯৩৫ জন, মারা গেছেন ৭০ হাজার ২৫৩ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হয় প্রাণঘাতী সার্স-কোভ-২ ভাইরাস, যা বিশ্বে সাধারণভাবে পরিচিতি পায় করোনাভাইরাস নামে। শনাক্ত হওয়ার তিন মাসের মধ্যে বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাসটি।
যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ যদিও অভিযোগ করে আসছে, চীনের গবেষণাগারে এই ভাইরাসটি কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে, তবে চীন বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, প্রাকৃতিকভাবেই আবির্ভাব ঘটেছে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটির।
গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে। ২০২০ সালের প্রথম সাত-আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক আক্রান্ত ও মৃত্যুর পর ওই বছরের শেষ দিকে কিছুটা কমে এসেছিল করোনা সংক্রমণ। এর মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানির করোনা প্রতিরোধী টিকা বাজারে এসে যাওয়ায় গণটিকাদান কর্মসূচিও শুরু করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।