মিয়ানমারে সড়ক অবরোধের নতুন ট্রেন্ড ‘গাড়ি নষ্ট’ 

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী ‘সামরিক জান্তা’ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। দেশবাসী শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করতে নানা কৌশল ব্যবহার করছেন প্রতিবাদকারীরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে ‘গাড়ি নষ্ট’ অজুহাত দেখিয়ে সড়ক অবরোধ।

মিয়ানমারে সড়ক অবরোধের নতুন ট্রেন্ড ‘গাড়ি নষ্ট’ 

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী ‘সামরিক জান্তা’ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। দেশবাসী শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করতে নানা কৌশল ব্যবহার করছেন প্রতিবাদকারীরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে ‘গাড়ি নষ্ট’ অজুহাত দেখিয়ে সড়ক অবরোধ।

সিএনএন জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করেই বুধবার দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে সমবেত হন কয়েক হাজার মানুষ। এতে অংশ নেন তরুণ-বৃদ্ধ, শ্রমিক, শিক্ষক, বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

তাদের মধ্যে অনেকেই পোশাকের ওপর লাল ফিতা পরে এবং তিন আঙুলের স্যালুট দেখিয়ে সেনাশাসনের প্রতিবাদ জানান।

একই সময় ইয়াঙ্গুনের প্রধান সড়ক এবং সেতুগুলোর ওপর হঠাৎই যানজট তৈরি হয়। তবে সেটি ছিল পুরোটাই ইচ্ছাকৃত। গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে বা তেল ফুরিয়ে গেছে অজুহাতে সড়কে দাঁড়িয়ে পড়ে শত শত গাড়ি।

এদিকে, মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর বলপ্রয়োগ করলে ‘কঠোর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে বলে দেশটির সেনাশাসকদের হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতিসংঘ।

এর পরপরই মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে মিয়ানমারের জান্তা সরকার জানিয়েছে, তারা বেশি দিন ক্ষমতা ধরে রাখবে না। নির্বাচন দিয়ে বিজয়ীদের হাতে নিয়মমাফিক ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে বলে ‘গ্যারান্টি’ দিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।

অবশ্য নতুন নির্বাচনের নির্দিষ্ট কোনো তারিখ এখনও জানানো হয়নি। তবে অভ্যুত্থানের পরপরই এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

দেশটিতে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন সাধারণ মানুষজন। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ হয়েছে। নিরাপত্তাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর কয়েকবার গুলি চালালেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা ছিল রাবার বুলেট।

গত সপ্তাহে নেপিদোয় বিক্ষোভরত এক নারীর মাথায় গুলি লাগে। তার অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন। জান্তা সরকারের মুখপাত্র জ মিন তুন বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারিয়েছেন।

বিক্ষোভকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে মঙ্গলবার এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, আমরা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করব। এরপর আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেব।

ইতোমধ্যে সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভ দমনে আইন সংশোধন করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। কেউ সশস্ত্র বাহিনীর কাজে বাধা দিলে ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। এছাড়া নতুন আইনে কেউ অভ্যুত্থানকারী নেতাদের বিরুদ্ধে ‘ঘৃণা বা অপমানসূচক’ কিছু প্রকাশ করলেই দীর্ঘমেয়াদী কারাদণ্ড বা মোটা অংকের জরিমানার মুখে পড়তে পারেন বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।